৩৫ জন বিশেষজ্ঞ হাঙ্গেরিয়ান সার্জনকে নিয়ে রাবেয়া-রুকাইয়ার খুলি ও মস্তিষ্ক আলাদা করার অস্ত্রোপচারের পর শুক্রবার (১ আগস্ট) এ তথ্য জানান চিকিৎসক দলের প্রধান আন্দ্রেস কসোকে। নিউরোসার্জন কসোকে দাতব্য সংস্থা অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশনের (এডিপিএফ) হয়ে কাজ করছেন।
এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, আলাদা করার পর চিকিৎসকরা দুই বোনের মাথার ক্ষত এরিয়া সফট টিস্যুতে ঢেকে ফেলতে শুরু করেন। এই টিস্যু এক্সপানসন প্রক্রিয়া হয়েছিল হাঙ্গেরিতে।
২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনা শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় জোড়া মাথার জমজ রাবেয়া-রুকাইয়া। রাবেয়া-রুকাইয়া যে বিরল অসুস্থতা নিয়ে জন্ম নিয়েছে, এমন অসুস্থতা বিশ্বে ৫০-৬০ লাখ নবজাতকের জন্মের বিপরীতে একটি ঘটে।
গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাদের। বিষয়টি নজরে এলে এ দুই বোনের চিকিৎসা তদারকি করতে থাকেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে ঢামেকে দু’জনের জোড়া মাথায় দুই দফা এনজিওগ্রামের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের প্রধান রক্তনালী আলাদা করা হয়। এরপর গত জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের জন্য রাবেয়া-রুকাইয়াকে হাঙ্গেরিতে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের মাথার খুলি ও সফট টিস্যু বাড়াতে বিশেষ অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
এরপর চূড়ান্ত অস্ত্রোপচারের জন্য গত জুলাইয়ের শেষ দিকে রাবেয়া-রুকাইয়াকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের সঙ্গে আসেন হাঙ্গেরিয়ান বিশেষজ্ঞরাও। অবশ্য অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ‘দুই বোনের বাঁচার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি’।
শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেন রাবেয়া-রুকাইয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ডাক্তাররা আমার দুই সন্তানকে আলাদা করেছেন। আমি নিজের চোখে তাদের দেখেছি। তারা এখন ভালো আছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৯
এইচএ/