তাদের দাবি, জমি অধিগ্রহণের ফলে ভাঙা হতে পারে তাদের বসতিঘর, বহুতল ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই তারা বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডের দু'পাশের বাসিন্দাদের সম্পদের ক্ষতি না করে বাইপাস (গড়িয়ারপাড়-কুদঘাটা-কালিজিরা) হয়ে ফোরলেন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এরইমধ্যে এ দাবিকে ঘিরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বরিশাল শহর বাইপাস মহাসড়ক উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটির নামে সংগঠনের নেতারা।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহার কাছে দেওয়া স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, ভাঙা-কুয়াকাটা ফোরলেনের কারণে নগরের প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত সিঅ্যান্ডবি রোডের দু’পাশের কয়েকশ বহুতল ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেশকিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, সরকারি শিশু সদন, সড়ক বিভাগ কার্যালয়, বিএডিসি, টিটিসি, মৎস্য ভবনসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বরিশাল শহর বাইপাস মহাসড়ক উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোক্তা মো. আবু জাফর, জাকির হোসেন সুলতান ও মো. মুকিবুর রহমান মুকিব জানান, ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল নগরের অংশের প্রায় ১১ কিলোমিটার সিঅ্যান্ডবি মহাসড়কে (গড়িয়ারপাড়-দপদপিয়া) ভাড়ি যানবাহনের প্রচুর চাপ। এছাড়া হাজার হাজার হালকা যানবাহনের কারণে সিঅ্যান্ডবি রোডের দু'পাশের মানুষ সঠিকভাবে রাস্তা পারপার হতে পারে না। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে হতাহত হন বরিশালের মানুষ।
এ অবস্থায় বরিশালের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে, প্রস্তাবিত ফোরলেনটি নগরের বর্তমান সিঅ্যান্ডবি রোড না হয়ে মূল শহরের এক পাশ দিয়ে গড়িয়ারপাড়-কুদঘাটা-কালীজিরা হয়ে দপদপিয়া পর্যন্ত নির্মাণের। ফলে এটি নগরের বাইপাস সড়ক হয়ে যাবে এবং নগরের ভেতরের সিঅ্যান্ডবি রোডের যানবাহনের চাপ কমে যাবে। পাশাপাশি বাইপাস হয়ে ফোরলেন নির্মিত হলে সড়ক বিভাগের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষযে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহা জানান, বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। এরপর এ বিষয়ে চূড়ান্তভাবে কোনো কিছু জানা যাবে।
অপরদিকে সহায় সম্বল রক্ষায় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাদত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ফোরলেনের সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তরা। গত বৃহস্পতিবার সিটি মেয়রের বাস ভবনে সিঅ্যান্ডবি রোডের ক্ষতিগ্রস্তরা যান ও মেয়রকে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
পরে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ জনগণের সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য বাইপাস হয়ে ফোরলেন বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। যাতে করে সাধারণ মানুষের সম্পদ ক্ষতি না করে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন করা হয়।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ভাঙা থেকে-কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৩৬ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার ফোরলেন নির্মাণে বর্তমান সিঅ্যান্ডবি রোডের (মহাসড়ক) দু’পাশে ২০ ফুট করে মোট ৩০২ দশমিক ৭০ একর জমি অধিগ্রহণ করবে সরকার। গত জুনে জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন হয়ে গেছে। জমি অধিগ্রহণে ১ হাজার ৮শ ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রাক্কলন তৈরি হয়েছে। প্রথম দফায় জমি অধিগ্রহণের জন্য ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এখন সড়ক বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এমএস/এএটি