বিদ্যালয় ভবন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর বোয়ালকান্দি গ্রামে একটি টিনের ছাপড়া ঘর তুলে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হয়। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) থেকে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয় এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলার দুর্গম অঞ্চল খ্যাত চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের রেহাই মৌশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠা হয়।
পরবর্তীকালে পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন ও চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় তিনশো।
গত ১৭ জুলাই যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ভাঙন। এতে বিদ্যালয়ের পাকা ভবনসহ খেলার মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর বোয়ালকান্দি গ্রামে টিনের ছাপড়া ঘর তুলে শুরু হয় পাঠদান কার্যক্রম। চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা। ১৮২ জন ছাত্র-ছাত্রী একযোগে ওই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সদ্য নির্মিত টিনের ছাপড়ায় জায়গার সংকুলান না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে অনেক শিশুরা পরীক্ষা দিচ্ছে।
শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, ছাপড়া ঘরে ব্রেঞ্চ পেতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে পরীক্ষা শুরুর দিকে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে খুব কষ্টে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শিশুদের।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, যমুনা নদীতে বিদ্যালয় ভবন বিলীনের কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছি। প্রায় ২০/২২ দিন ধরে টিনের ঘরে কোনো মতে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা। একযোগে একাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষা চলায় টিনের ঘরে আসন সংকুলান হচ্ছে না। ফলে প্রচণ্ড রোদের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচেই পরীক্ষা নিতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীদের।
চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, যমুনার ভাঙনে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম চলছে অনেক কষ্টকর পরিবেশে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবু তাহির জানান, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৯
আরএ