ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজারে এখনো জমেনি পশু বেচাকেনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
মৌলভীবাজারে এখনো জমেনি পশু বেচাকেনা ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: প্রতিবছরের মতো এবারও স্থানীয় পশুর বড় ঘাটতি নিয়ে মৌলভীবাজারে চলছে কোরবানির পশুর হাট। ঈদের আর মাত্র দু’দিন বাকি থাকলেও এখনো জমে ওঠেনি বেচাকেনা। হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি বলে দাবি বিক্রেতাদের।

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলায় মোট ৪৩টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে ১৭টি স্থায়ী এবং ২৬টি অস্থায়ী।

জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসেছে মৌলভীবাজার পৌরসভাধীন এম সাইফুর রহমান স্টেডিয়ামে।

সরেজমিনে এম সাইফুর রহমান স্টেডিয়ামের পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু উঠেছে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ৩৬ হাজার টাকা দামের গরু রয়েছে। ছাগল ও অন্যান্য ছোট প্রাণীর দাম সর্বোচ্চ ২৩ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ৭ হাজার পর্যন্ত। কিন্তু ক্রেতারা এসে দাম-দর করে বেশিরভাগ ফিরে যাচ্ছেন। আর যারা কিনছেন তাদের চড়া দাম দিতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই হাটে সবচেয়ে দামী পশুর দাম ১০ লাখ টাকা। গরুটি শাহবন্দর থেকে নিয়ে এসেছেন সাহেল আহমদ নামের একজন খামারি। সাহেল বাংলানিউজকে বলেন, অনেক যত্ন করে পশুটিকে পালন করেছি। ভালো দাম না পেলে বিক্রি করব না, পরের কোরবানির জন্য রেখে দেব। তবে ইতোমধ্যে গরুটি সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম হয়েছে বলে জানান তিনি।  

এদিকে মৌলভীবাজারে চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম। এমন পরিস্থিতিতে তুলনামূলক বেশি দামে কোরবানির পশু কিনতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারাও সুযোগ বুঝে বেশি দাম হাঁকছেন বলে দাবি ক্রেতাদের। গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম বেশি হওয়ায় পশু কিনতে শেষ সময়ের অপেক্ষা করছেন তারা।  

ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজশহরের গীর্জাপড়া এলাকার বাসিন্দা ফারুক তরফদার বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে অনেক গরু তবুও চড়া দাম। দু’দিন বাজার ঘুরে কোনোভাবে অর্ধ লাখ টাকায় একটি গরু কিনেছি। দাম বেশি হওয়াতে ক্রেতারা আমার মতো সময় নিচ্ছেন।

এম সাইফুর রহমান স্টেডিয়ামের পশুর হাটের ইজারাদার জোবায়ের আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ২৫ লাখ টাকা দিয়ে এই হাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাটে বেচা-বিক্রি এখনো জমছে না। ইদের আর মাত্র দু’দিন সে হিসেবে অন্যান্য বছরের তুলনায় বলতে গেলে আমরা লোকসানে আছি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর কোরবানির সম্ভাব্য চাহিদা রয়েছে ৮২ হাজার ৯৬৪টি। মজুদ আছে ৬৪ হাজার ৮২২টি। সেই হিসেবে ঘাটতি রয়েছে ১৮ হাজার ১৪২টি। এর মধ্যে সম্ভাব্য গরু ও মহিষের চাহিদা রয়েছে ৫৯ হাজার ৯৪৯টি। আর মজুদ আছে ৪৮ হাজার ২৬২টি। এর ঘাটতি আছে ১১ হাজার ৬৮৮টি। ছাগল ও ভেড়ার সম্ভাব্য চাহিদা আছে ২৩ হাজার ১৫টি। কিন্তু মজুদ আছে মাত্র ১৬ হাজার ৫৬১টি। সেই হিসেবে ঘাটতি ৬ হাজার ৪৫৪টির।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবিএম সাইফুজ্জামান জানান, বন্যার করণে অনেক কৃষক গবাদিপশু পালনে আগ্রহ হারানোর ফলে এবার একটু বেশি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ওই ঘাটতি পূরণ হবে আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা গবাদি পশু দিয়ে। এর মধ্যে যেসব পশু বাজারে উঠেছে তাদের গুনাগুন পরীক্ষা ও পশুর স্বাস্থ্যগত সেবা দেওয়ার জন্য প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের বিশেষ টিম কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।