গাড়ির অতিরিক্ত চাপ ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পর্যটন নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কথা জানিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনমাসের জন্য এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে কক্সবাজার পৌরসভা। কিন্তু কাজে ধীরগতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে।
কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ইউজিআইআইটি (আর্বান নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প) প্রকল্পের অধীনে অন্য আরও দুটি সড়কের সংস্কার কাজসহ প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারের প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু বারবার প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন এবং ড্রেন নির্মাণ নিয়ে সমস্যা হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি। এখন সড়কের কাজ শেষ হওয়ায় সড়কটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ড্রেনের কাজ চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সংস্কার কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) থেকে সড়কটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ফলে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটমসহ ছোট ছোট যানবাহন চালকেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শহরের মেরিনড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগরের বাসিন্দা সাংবাদিক আহমদ গিয়াস জানান, বহুল কাঙ্ক্ষিত এ সড়কটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়ার পর শহরতলীর একাংশসহ হিমছড়ি-উখিয়া-টেকনাফের কয়েক লাখ মানুষের মধ্যে আনন্দ বয়ে যায়। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ায় মানুষ খুব খুশি। তবে পর্যটক এবং সাধারণ মানুষের এ খুশি ম্লান করে দিচ্ছে যানজট।
তবে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, স্থানীয়রা ড্রেনের জন্য জমি না ছাড়ায় রাস্তার কিছু অংশে ড্রেন নির্মাণ করতে বাধ্য হয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা। ড্রেন নির্মাণ না করলে এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হতো। তবে ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হলে এ সড়কে যানজট কমে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি সংস্কার কাজ শুরুর পর সড়কটি বন্ধ রাখায় শহরের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এসময় মেরিন ড্রাইভে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সমুদ্র সৈকতের বালুচরের উপর দিয়ে বিকল্প কাঁচা পথ তৈরি করা হয়। তবে এ পথ দিয়ে যানবাহন চলাচল নির্ভর করে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটার উপর। প্রতিদিন দুইবার সামুদ্রিক জোয়ারের সময় ৫/৬ ঘণ্টা করে এবং সমুদ্র উত্তাল থাকলে দিনের বেশিরভাগ সময়ই যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত ঘটতো দুর্ঘটনাও। এমনকি গত ছয় মাসে দুই শতাধিক গাড়ি সামুদ্রিক জোয়ারের ধাক্কায় বিকল হয়ে যায়। যারমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি গাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক গাড়িও রয়েছে।
প্রায় ২ বছর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন করেন। । ফলে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে শহরের একমাত্র সংযোগকারী সড়ক হয়ে ওঠে কলাতলীর এই গ্রামীণ রাস্তাটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৯
এসবি/জেডএস