বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজারে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে এ কথা জানান। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা জনগোষ্ঠীটির লোকজনকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সবশেষ পরিস্থিতি জানাতে নিজের কার্যালয়ে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন আবুল কালাম।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। টেকনাফ জাদিমুরা শালবাগান থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বহনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে পাঁচটি বাস এবং তাদের মালামাল পরিবহনের জন্য রয়েছে তিনটি ট্রাক।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত দমন-পীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে লাখো রোহিঙ্গার ঢল নামে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা। সবমিলিয়ে এখন ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের ৩২টি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের এভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করায় তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বিভিন্নভাবে কূটনৈতিক তৎপরতার শুরু করে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে দু’দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন হয়। সেই গ্রুপের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩০টি পরিবারের ১৫০ রোহিঙ্গাকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য ঢাকা-নেপিদো প্রক্রিয়া শুরু করলেও আশ্রিতদের বিক্ষোভের মুখে তা শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। এরপর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে যায়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিকভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখা হলেও এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি।
এর ১৮ মাস পর বাংলাদেশের পাঠানো প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা থেকে ৩ হাজার ৪৫০ জনকে ফিরিয়ে নিতে সম্প্রতি সম্মত হয় মিয়ানমার। সেই প্রক্রিয়াই গড়িয়েছে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। কিন্তু রোহিঙ্গারা রাজি না হলে বৃহস্পতিবারও প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় কাটছে না।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
এসবি/এইচএ/