ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কাবিননামায় ‘কুমারী’ শব্দ আর থাকছে না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
কাবিননামায় ‘কুমারী’ শব্দ আর থাকছে না

ঢাকা: কাবিননামার (নিকাহ্‌নামা) ফর্মের ৫ নম্বর কলামে কনে ‘কুমারী’ থাকা শব্দটি বাদ দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। তবে এর পরিবর্তে অবিবাহিতা শব্দটি যোগ করতে বলেছেন। এছাড়া ৪ নম্বর কলামে ‘ক’ সংযুক্ত করে ছেলেদের ক্ষেত্রে বিবাহিত, বিপত্নীক ও তালাকপ্রাপ্ত কিনা তা সংযোজনের রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রোববার (২৫ আগস্ট) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ এ রায় দেন।
 
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জেড আই খান পান্না ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

সম্পূরক আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।
 
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
 
পরে জেড আই খান পান্না বলেন, আদালত বলেছেন কুমারী শব্দটা থাকা ঠিক না। সেটা বাদ দেওয়া এবং কাবিনের ৪ নম্বর কলামে বরের ক্ষেত্রে সে বিবাহিত কি-না, তালাকপ্রাপ্ত কি-না অথবা বিপত্নীক কি-না সেটা লিখতে হবে।  
 
আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, ৫ নম্বর কলামের কুমারী শব্দে আমাদের আপত্তি ছিলো। কুমারী বিষয়টা পুরোপুরি প্রাইভেসির ব্যাপার। রাইট টু প্রাইভেসি অনুযায়ী এ রিট করেছি।  

আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, কাবিননামার ফর্মের (বাংলাদেশ ফর্ম নম্বর-১৬০০ ও ১৬০১) পাঁচ নম্বর কলাম কেন বৈষম্যমূলক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কেন ‘কুমারী’ শব্দটি বিলোপ করে কাবিননামা সংশোধন করা এবং বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো ক্রমিক কাবিননামায় উল্লেখ করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছিলো।

এই রুলের শুনানিতে এ বিষয়ে ধর্মীয় মতামত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। ১৬ জুলাই এ বিষয়ে ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ৫ নম্বর কলামে এটা থাকা উচিত না। কারণ ব্যক্তির মর্যাদা ও গোপনীয়তাকে ক্ষু্ণ্ণ করে। যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক নয়। মুসলিম শরীয়তে এ ধরনের শর্ত নেই।   

ওই অনুচ্ছেদটি বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নারীপক্ষ এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনটি করে।
 
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রিন্টিং এবং প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচাকলসহ সংশ্লিষ্টরা।
 
আবেদনকারীদের দাবি, কাবিননামায় শুধু কনের বৈবাহিক অবস্থা ও তথ্য সন্নিবেশিত করার জন্য অনুচ্ছেদ রয়েছে। তবে বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো অনুচ্ছেদ নেই। এটা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক। সংবিধান অনুসারে কারও প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। ওই অনুচ্ছেদটি সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।