এই প্রবাহিত অগ্রযাত্রায় অনেক জীববৈচিত্র্যের প্রাণসঞ্চারকারী শক্তি সে। পরিবেশ রক্ষায় পাহাড়ি ছড়ার অবদান অনস্বীকার্য।
তবে, বাস্তবতা অন্য কথা বলে। এই পাহাড়ি ছড়ার সৌন্দর্য যে চিরদিনের নয়, এটা বুঝিয়ে দেয় পরিবেশ দূষণ। ক্রমাগত ছড়া থেকে বালু উত্তোলন, ছড়ার পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়া, ছড়ার পাড়ের বৃক্ষরাজি ধ্বংস, ছড়া দখল করে ঘরবসতি, পার্শ্ববর্তী কল-কারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য অবলীলায় ছড়াতে ফেলার ব্যবস্থা প্রভৃতির সরাসরি প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাহাড়ি ছড়া।
ইতোমধ্যে চা-বাগান অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল উপজেলার অনেক পাহাড়ি ছড়া পানিশূন্যতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে মরে গেছে। অবশিষ্ট ছড়াগুলো মৃতপ্রায়। হয়তো মরে যাবে কয়েক বছরের মধ্যেই। তাতে ধ্বংস হবে পরিবেশ ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য। তখন চা-বাগানের প্রান্তিক মানুষেরা টিকে থাকার সংগ্রাম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। বিপন্ন হয়ে পড়বে ছড়াকে কেন্দ্র করে বেচে থাকা নানা জীববৈচিত্র্যের টুকরো টুকরো অংশ। যারা আমাদের চিরসবুজ প্রকৃতির একেকটি সঞ্জীবনী অধ্যায়। প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার বড় একটি অংশ পাহাড়ি ছড়া সংরক্ষণ। অর্থাৎ পাহাড়ি ছড়াগুলোকে দূষণমুক্ত করে বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হতে সাহায্য করে। কিন্তু কে করবে প্রকৃতির এই উপকার সাধন। কে এগিয়ে আসবে প্রভাবশালী বালুখেকোচক্রের কবল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে পাহাড়ি ছড়াতে প্রাণ ফেরাতে? কেননা, ছড়ায় প্রাণদানে সহায়তা করা আজ জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রকৃতির এ জলধারাগুলো যে আজ আমাদের হাত ধরেই বাঁচতে চায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ি ছড়াগুলোর উৎপত্তিস্থল পাহাড়ের পাদদেশ থেকে। আমাদের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী এক ধরনের জলাভার। এগুলো এখন বিভিন্নভাবে দূষণের শিকার হয়ে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এদের সংরক্ষণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পাহাড়িছড়াগুলো প্রকৃতি থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়:০৯১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯
বিবিবি/এএটি