ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
বরিশালে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ব‌রিশাল: নারী ও শিশুর ওপর একের পর এক যৌন সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে বরিশালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় ‘যৌন আক্রমণ আর নয়’- এ স্লোগানে নগ‌রের অশ্বিনী কুমার হলের সম্মুখে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম।

ধর্ষণ, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা ও যৌন অত্যাচারসহ সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে নারীপক্ষ ও বরিশাল মহিলা কল্যাণ সংস্থা।

মানববন্ধনে নারীকে যথার্থ সম্মান প্রদান এবং যারা যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটাবে, দ্রুততার সঙ্গে উপযুক্ত শাস্তির মাধ্যমে তাদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।

তারুণ্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্মের জেলা সমন্বয়কারী সোহানুর রহমানের সঞ্চলনায় কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরিশাল শাখার যুগ্ম সম্পাদক প্রতিমা সরকার, এসইউভিও’র নির্বাহী পরিচালক হাসিনা বেগম নীলা, বিএসডিপির প্রতিনিধি মো. জাহিদুল ইসলাম, তারুণ্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্মের সদস্য ইশতিয়াক আহমেদ রাব্বী প্রমুখ।  

এসময় বক্তারা বলেন, নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা নতুন কোনো বিষয় নয়। এটি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগও চলমান আছে। তবে নারীর ওপর সহিংসতা দমনে রাষ্ট্র এতটাই ব্যর্থ যে সহিংসতা এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের নারী-ই যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে; ছেলে শিশুরাও বলাৎকার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। যেন দেশে ধর্ষণ ও ধর্ষণ করে হত্যার মহোৎসব চলছে।  

ঘরে, বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টা বা যৌন হয়রানি, উত্যক্তকরণ, এসিড আক্রমণসহ নানাবিধ সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। পরিবার, সমাজ, এমনকি রাষ্ট্র এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির কাছেও নিরাপদ নয় তারা।

এসময় প্রতিবাদীরা বেশ কিছু ঘটনার তথ্য তুলে ধরেন। যা থেকে দেখা যায়, সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, বিগত ছয় মাসে সারাদেশে ৬৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ১৫৩ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩৭ জন এবং ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন সাত জন নারী। ১০৫ জন নারীর ওপর ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। যার মধ্যে একজন আত্মহত্যা করেছেন এবং একজনকে হত্যা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২৭ জন। যাদের মধ্যে আট জন আত্মহত্যা করেছেন। ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছেন তিন জন নারী ও দুই জন পুরুষ।

বক্তারা হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করে নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ সংক্রান্ত সব আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতা নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও যথাযথ নির্দেশ দিতে সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, সে‌প্টেম্বর ০৩, ২০১৯
এমএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।