ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হোসেনি দালান হামলার ৪ বছর, মাত্র ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
হোসেনি দালান হামলার ৪ বছর, মাত্র ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

ঢাকা: প্রায় চার বছর হয়ে গেলেও ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলা মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হয়নি এখনও। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়েই আছে।

১৪৩৭ হিজরি সনের ০৯ মহররম দিবাগত রাতে হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময়ে নৃশংস বোমা হামলা হয়। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পবিত্র আশুরার দিন (হিজরি হিসেবে) এ বোমা হামলার চার বছর পূর্ণ হলো।

যদিও ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর পুরান ঢাকায় হামলাটি হয়েছিল।

এ ঘটনার মামলা বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। ৪ বছরে ট্রাইব্যুনাল ৪৬ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। সর্বশেষ গতবছরের ২২ অক্টোবর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। প্রায় এক বছর ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ আটকে আছে। যদিও এই সময়ে মামলার আরও ছয়টি তারিখ ধার্য ছিল।

এদিকে, সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক মো. মুজিবুর রহমান ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল দিনটি পিছিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম সঠিকভাবেই চলছিল। কিন্তু গত বছর এ মামলায় কারাগারে থাকা আসামি জাহিদ হাসান ওরফে রানার আইনজীবী দাবী করেন তার আসামির বয়স ১৭ ছিল মামলায় চার্জশিট দাখিলের সময়। আইন অনুযায়ী আসামি রানা শিশু হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে হতে হবে। এ কারণে ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। সম্প্রতি ওই সম্পূরক চার্জশিট দাখিলও করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ওই সমস্যা কেটে যাওয়ায় এবার নিয়মিত সাক্ষ্যগ্রহণ হবে বলে বাংলানিউজকে তিনি জানিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আসেন নগরীর বিভিন্ন এলাকার ২০ থেকে ২৫ হাজার শিয়া সম্প্রদায়ের লোক। রাত পৌনে ২টার দিকে হোসনি দালানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় সাজ্জাদ হোসেন ও জামাল উদ্দিন নামে দুইজন নিহত হন। শতাধিক আহতও হন।

ঘটনার দুইদিন পর পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, জেএমবির ১৩ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায় এ ঘটনায়। তবে তাদের মধ্যে তিনজন ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাদের বাদ দিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন- নেত্রকোনার কলমাকান্দার লেংগুড়া মধ্যপাড়ার ওমর ফারুক মানিক, একই উপজেলার হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বড়ইতলী গ্রামের শাহজালাল মিয়া এবং গাইবান্ধার সাঘাটার ডিমলা পদুম শহরের চান মিয়া। এই চারজন জামিনে রয়েছেন।

অন্যদিকে, মামলাটিতে সাঘাটার কচুয়া দক্ষিণপাড়ার কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক, বগুড়ার আদমদীঘির কেশরতা গ্রামের মাসুদ রানা মাসুদ ওরফে সুমন, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, দিনাজপুর কোতোয়ালির ঘাসিপাড়ার আবু সাঈদ রাসেল ওরফে সোলায়মান ওরফে সালমান ওরফে সায়মন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম ইব্রাহিমনগর বালুরমাঠ এলাকার আরমান ওরফে মনির, কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব রসুলপুরের জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মুসায়াব ও দিনাজপুরের রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব ওরফে সুমন কারাগারে রয়েছেন।

আসামিদের মধ্যে জাহিদ, আরমান, রুবেল ও কবির আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৭ সালের ৩১ মে আসামিদের পক্ষে তাদের নিয়োজিত আইনজীবী ফৌজদারি কার্যবিধির ২৬৫ (গ) ধারা অব্যাহতির আবেদন করেন।

মহানগর দায়রা জজ সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
এমএআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।