ক্যালেন্ডারের পাতায় কিছুটা পেছনে গেলে দেখা যাবে, ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর তেজগাঁওয়ের এই সড়ককে ট্রাকের অবৈধ দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন তৎকালীন মেয়র আনিসুল হক। সেসময় ট্রাকের চালক ও শ্রমিকদের রোষানলের মুখে তাকে অবরুদ্ধ থাকতে হয় বেশ কয়েক ঘণ্টা।
ও বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটা ও বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে সড়কটিকে ট্রাকের দখলে থাকতে দেখা যায়। তেজগাঁওয়ে ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান রাখার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও এসব যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখা হয় মূল সড়কেই। তিন লেনের প্রশস্ত সড়ক থাকলেও ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের কারণে মাত্র একটি সরু লেন দিয়েই চলাচল করতে হয় অন্য গাড়িগুলোকে।
দিনের বেলায় অল্প কিছু ট্রাক সড়কটির ওপর দেখা যায়। তবে, রাত যত বাড়ে, সড়ক দখল করা ট্রাকের সংখ্যা ততই বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এসব ট্রাক চলে আসে সাতরাস্তা মোড় থেকে মহাখালীগামী মূল রাজপথের ওপরেও।
এছাড়া, মরার ওপর খাঁড়ার ঘা, ট্রাকের চালক ও শ্রমিকদের জন্য সড়কের পাশে ফুটপাতের ওপরই গড়ে উঠেছে অন্তত অর্ধশতাধিক দোকান। ট্রাকের আড়াল ও দোকানের ফুটপাত দখলের কারণে রাতে সড়কটি দিয়ে হাঁটাচলা করতে হয় অনেকটা ঝুঁকি আর বুক ভরা সাহস নিয়ে।
কাওরান বাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইয়াসিন রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাতে অফিস শেষে সাতরাস্তা মোড়ে এসে বাসায় যাওয়ার জন্য বাসে উঠি। কিন্তু, ট্রাকের কারণে সড়কে যানজট লেগে থাকে। তাই, রিকশা থেকে নেমে হেঁটেই মোড় পর্যন্ত আসতে হয়। কিন্তু, ফুটপাতে গেলে একেবারে ট্রাকের আড়ালে পড়তে হয়। এতে বেশ ভয় লাগে। এখানে প্রায়ই নাকি ছিনতাই হয়।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুস্তম এই সড়কটির দখল নিয়ন্ত্রণ করেন। তার দেখভালেই সড়কের ওপর রাখা হয় এসব যানবাহন। এর জন্য প্রতি ট্রাক থেকেই মাসোহারা যায় তার পকেটে।
এ বিষয়ে জানতে সড়কটির রেলক্রসিং প্রান্তে অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে গেলেও পাওয়া যায়নি রুস্তমকে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার খোঁজ চাইলে প্রতিবেদকের চারপাশে জড়ো হতে থাকেন শ্রমিক নেতারা।
সড়কটি ফের বেদখল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আশার বাণী শুনিয়েছেন ডিএনসিসির বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, সড়কটি দখল হয়েছে। কিন্তু, আপনারা জানেন, বিগত তিন মাস আমাদের ডেঙ্গু ইস্যুতে লড়াই করতে হয়েছে। এখন এই বিষয়টি দেখছি। এখানে ট্রাকের যারা সংশ্লিষ্ট আছেন, তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে আমার কথা হয়েছে। আমরা অবশ্যই সড়কটি দখলমুক্ত করবো।
দখলদারদের সঙ্গে আপনাদের আগেও কথা হয়েছে, কিন্তু আপনার এখনকার কথায় আমরা কি আশা পাবো? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিক বলেন, যারা এই সড়ক ব্যবহার করেন তাদের আমি আশ্বাস দিতে চাই, এটি অবশ্যই দখলমুক্ত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯
এসএইচএস/একে