ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুর-ছন্দের মধ্য দিয়ে লালনকে স্মরণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
সুর-ছন্দের মধ্য দিয়ে লালনকে স্মরণ সুর-ছন্দের মধ্য দিয়ে চলছে লালনোৎসব। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় চলছে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ এর ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালনমেলা। লাখো সাধু-ভক্ত আশেকান ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় সকাল থেকে গভীর রাত অবধি আখড়াবাড়ি থাকে মুখোরিত।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) থেকে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত তিনদিনের স্মরণোৎসবে জড়ো হয়েছে সাধু, গুরু, ভক্ত, আশেকান এবং অনুসারীরা। সাঁইজির বাণীতে সুর-ছন্দের মধ্য দিয়ে গুরু সাঁইজিকে স্মরণ করতেই প্রতিবছর এসময়ে তাদের আগমন ঘটে তীর্থধামে।

কোথাও গুরুভক্তি, কোথাও সাঁইজির বাণীর চুলচেরা বিশ্লেষণ। আগ্রহভরে হৃদয়োঙ্গম করছেন অনুসারীরা। আবার কোথাও বা চলছে সাঁইজির বাণীতে গানের আসর। সেখানে জড়ো হওয়া ভক্ত আশেকানরাও সুর ও ছন্দের তালে তালে হারিয়ে যাচ্ছেন অন্য কোনো জগতে।

ভক্তি, শ্রদ্ধা, লালনের গানের সুর-ছন্দ আর আধ্যাত্মিক কথা বার্তার মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহকে স্মরণ করেন সাধু-ভক্তরা।  

মুন্সিগঞ্জ জেলা থেকে আগত বাউল সামাদ ও আকরাম দেওয়ানের শিষ্য। গুরুর কাছ থেকে জেনেছেন লালন শাহ্ সম্পর্কে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নিয়মিত আসেন এখানে। বছরে দুইবার সাধু সঙ্গে যোগ দেন তারা। অন্যান্যদের মতো সাধুদের আচার রিতিতে পারদর্শী তেমনি বাজান বাঁশিও। লালনের গানের সুর তোলেন তার বাঁশিতে। আখড়াবাড়িতে দেখা যায় তাকে ফকির লালন শাহ এর ‘মানুষ ছাড়া খেপা রে তুই’ গানের সুর তুলেছেন। বাঁশিতেই গাইছেন তিনি গান।

বাঁশিতে সুর তুলছেন এক লালন ভক্ত।  ছবি: বাংলানিউজখেলাফতধারী সাধু ময়না খাতুনও তার হাতের একতারাটিতে সুর তুলছেন বাউল গানের। একতারার সুরের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গান করছেন। অন্যান্যরা শুনছেন তার গান। ‘যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান, জাতি গোত্র নাহি রবে, এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে’।

ফকির রব্বানী শাহ্ বলেন, ‘বিশ্বমানব দর্শনের একটাই মূল দর্শন সবার ওপর মানুষ সত্য তার ওপর নাই। ’ সাঁইজির এসব গানই আমাদের প্রেরণা। মানুষকে ভক্তি ও সেবার মধ্য দিয়ে মানব প্রেমের ক্ষুধা মেটাতেই এই ধামে আসা।

সাঁইজির ১২৯তম লালন স্মরণোৎসবকে ঘিরে প্রতিদিনই সন্ধ্যা ৭টায় যথারিতী লালন দর্শনালোকে আলোচনা সভা শেষে রাতভর চলে লালন একাডেমির শিল্পীসহ দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠান। শুক্রবার গভীর রাতে সংগীতানুষ্ঠান শেষে সাঙ্গ হবে এই সুর-ছন্দের হাট।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।