ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবশেষে মায়ের কোল পেল পঞ্চগড়ের সেই শিশুটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৯
অবশেষে মায়ের কোল পেল পঞ্চগড়ের সেই শিশুটি

পঞ্চগড়: পঞ্চগড় শহরের কামাতপাড়া এলাকার রাস্তা পাশে পড়ে থাকা কন্যা শিশুটির মা রিমু আক্তারকে খুঁজে পাওয়া গেছে। মিলেছে শিশুটির পরিচয়। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে মোনালিসা। 

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে রিমু আক্তার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিসিইউনিটে গিয়ে তার সন্তানকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করেন। শিশুটি এখন সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে, ওই নারী ও তার বাবা আইবুল ইসলাম ও মা শিল্পি আক্তারকে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  

প্রথমে শিশুটির বয়স এক মাস ধারণা করা হলেও তার মা রিমু জানান শিশুটির বয়স মাত্র ১৬ দিন। স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জের ধরে শিশুটিকে পঞ্চগড়ে দত্তক দিতে চেয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু কেউ না নেওয়ায় তাকে রেখেই পালিয়ে যান বলে স্বীকার করেন।  

গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে শহরের কামাতপাড়া এলাকার অশোক চন্দ্র মদকের বাড়ির রাস্তার পাশে ওই কন্যা শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখেন ওই এলাকার মোজাম্মেল হক। পরে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তাৎক্ষণিক শিশুটির মায়ের নাম জানা গেলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। হাসপাতালে সিসিইউতে পুলিশি পাহারায় ভর্তি ছিল শিশুটি। এরমধ্যে অনেক নিঃসন্তান দম্পত্তি শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে।  

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) জামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় এলাকার আইবুল ইসলামের মেয়ে রিমুর বিয়ে হয় পঞ্চগড় কামাতপাড়া এলাকার মাসুদের সঙ্গে। পরে পার্বতীপুরের এক ট্রাক চালকের সঙ্গে পালিয়ে যান রিমু। গত ২ অক্টোবর ওই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রিমু। তার আগে আরেকটি ছেলে সন্তান রয়েছে তার। কিন্তু ওই কন্যা সন্তান প্রসবের পর তা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। নিরুপায় হয়ে শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার উদ্দেশে সাজিয়ে নিয়ে যান পঞ্চগড়ে। পঞ্চগড় কামাতপাড়া এলাকায় তার নানীর বাড়িতে শিশুটিকে রেখে যেতে চাইলে তারা নিতে রাজি হননি। পরে ওই এলাকার পেয়ারা মজুমদারসহ আরও কয়েকটি বাড়িতে শিশুটিকে দত্তক দিতে ব্যর্থ হয়ে এক গলিতে শিশুটিকে রেখে চলে যান রিমু। এরপর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে শিশুটির মাকে খুঁজে পায়। বর্তমানে হাসপাতালে মা ও শিশু পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন বাংলানিউজকে জানান, টেলিভিশন ও পত্রিকায় জেলা প্রশাসক তার সন্তানকে কোলে তুলে নিয়েছে জেনে ওই নারীর বুকে মাতৃত্ব জেগে ওঠে। রিমু  এখন তার সন্তানকে ফিরে পেতে চায়। এখন রিমুর সন্তানকে হাসপাতালে রেখে কয়েকদিন দেখাশোনা করা হবে। সেখানে বোঝা যাবে শিশুটি লালন পালনে যোগ্য কি না। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।