রোববার (২৭ অক্টোবর) লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে অবৈধ আয় ও সম্পদ অর্জনের জন্য মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
লোকমান-নামা
ক্যাসিনো চালিয়ে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা করে কামাতেন লোকমান হোসেন ভূঁইয়া।
যার ভিত্তিতে রোববার (২৭ অক্টোবর) দুদক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সংস্থার উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া অবৈধভাবে চার কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকার স্থাবর-অবস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দারুণ পরিচিতি লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার। ২৫ বছর ধরে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের দায়িত্বেও তিনি। বাগিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবির পরিচালকের পদও। ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত হয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার হন তিনি।
দুদক সূত্র জানা যায়, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া রাজধানীর মতিঝিলের মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসার জন্য ভাড়াবাবদ প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা করে মাসে প্রায় ৪১ কোটি টাকা আদায় করেতেন। ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত ৪১ কোটি টাকা তিনি অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড ব্যাংক এবং কমনওয়েলথ ব্যাংকে রেখেছেন।
জানা যায়, বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালুর হাত ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আবির্ভাব ঘটে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার। ছাত্রদল নেতা হিসেবে তিনি বিএনপির শাসনামলে টেন্ডার বাণিজ্যেও সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনে টাকার বিনিময়ে কাউন্সিলরশিপ ও পদ বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে লোকমানের বিরুদ্ধে। সারাজীবন ফুটবল সংগঠক হিসেবে পরিচিত লোকমান ২০১৩ সালে ক্রিকেট বোর্ডেও ঢুকে পড়েন। বিসিবির পরিচালক পদে বসেই একের পর এক ব্যবসা বাগিয়ে নিতে থাকেন লোকমান।
সেলিম-নামা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দা সেলিমা প্রধান জাপানে থাকা অবস্থায় তার ফুপাতো ভাইয়ের সঙ্গে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। এর পরেই তার ব্যবসার প্রসার বাড়তে থাকে। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘটের জেবি সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি পি-২৪ নামে ল ফার্মের মালিক। এ নামেই তার অনলাইন ক্যাসিনোর জন্য একটি অ্যাপস রয়েছে। এর মাধ্যমেই তিনি বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করেন। সেলিম প্রধানকে দুদকের অনুসন্ধান দল অনলাইনভিত্তিক অবৈধ ক্যাসিনোর মূল গডফাদার হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তিনি থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, সেলিম প্রধান রূপালী ব্যাংক লিমিটেড থেকে অবৈধভাবে ১শ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা তিনি এখনও শোধ করেননি।
প্রকৃতপক্ষে সেলিমের বৈধ আয়ের কোনো উল্লেখযোগ্য উৎস পায়নি দুদক। অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ দিয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। সব মিলিয়ে সেলিম প্রধান অবৈধভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া যায়।
***লোকমান-সেলিমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
ডিএন/এএ