ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীর হাট-আবুপুর চ্যানেল সচল করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৯
মৌলভীর হাট-আবুপুর চ্যানেল সচল করার দাবি

বরিশাল: মৌলভীর হাট-আবুপুর চ্যানেল সচল করার দাবি জানিয়েছেন বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে চলাচলকারী লঞ্চের মাস্টাররা। তাদের মতে, বরিশাল থেকে মেঘনা হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গাতে যেতে এ চ্যানেলটিই সব থেকে নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী। 

তাই তারা এরইমধ্যে এ প্রস্তাবনা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। শিগগির লিখিত আকারেও প্রস্তাবনাটি দেওয়া হবে বলে জানান মাস্টাররা।

বরিশাল-ঢাকা রুটের বিলাসবহুল লঞ্চ এমভি সুন্দরবন-১০ এর মাস্টার মজিবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বরিশাল থেকে ঢাকা বা ঢাকা-বরিশাল আসতে বৃহত্তর মেঘনা নদীতে যাতায়াত করতে হয়। বহুরূপী এ নদী শুধু বৈরী আবহাওয়ায় নয়, নিজের খেয়াল-খুশি মত যেকোনো সময় বিরূপ আচরণ করে।

তিনি বলেন, বর্ষার সময় তারা বরিশালের হিজলার মিয়ারচর চ্যানেল দিয়ে মেঘনা নদী হয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতেন। আর এ চ্যানেলটি প্রতিনিয়ত খনন করে ব্যবহার উপযোগীর কাজ করে থাকে বিআইডব্লিউটি’র ড্রেজিং বিভাগ। কিন্তু কয়েকমাস আগে এ চ্যানেলের মুখে একটি মালবাহী নৌযান ডুবে যায়। এরপর সেটি উত্তোলন করা সম্ভব না হলে গত ২ মাস ধরে পলি জমে মিয়ারচর চ্যানেলটি যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

পরে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্ধারিত কালীগঞ্জ রুট দিয়ে ঢাকা-বরিশালের লঞ্চ চলাচল করছে। তবে সেখানে বর্তমানে নাব্যতা সংকট প্রকট। আবার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ডুবোচর। এছাড়া মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার এ চ্যানেলটিতে পানির প্রচুর স্রোত থাকে এবং রাতের বেলা মালবাহী জাহাজ বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি নৌযানগুলো কালীগঞ্জ হয়ে যাতায়াত করলে মিয়ারচর থেকে দুই ঘণ্টার মত সময় বেশি লাগে এবং দেড় ব্যারেল তেলও বেশি খরচ হয়।

মজিবর রহমান বলেন, তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা হিজলার মৌলভীর রহাট-আবুপুর চ্যানেল সচল করার কথা এরইমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছি, লিখিতও দেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, এ চ্যানেল দিয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের নৌযানসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবরুটের নৌযান নিরাপদ ও শান্তিতে চলাচল করতে পারবে। তিন/চার বছর আগে এখান থেকে আমরাও লঞ্চ চালনা করেছি। তবে মিয়ারচর দিয়ে যাতায়াতের কারণে এ রুটটি ব্যবহার না হওয়ায় এখন কিছুটা পলি জমেছে। চার কিলোমিটারের মত পথ ড্রেজিং করলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এমভি পারাবত-১০ লঞ্চের মাস্টার শেখ কামরুজ্জামান বলেন, মিয়ারচরে প্রতিনিয়ত ড্রেজিং করতে হয়। আর কালীগঞ্জের চ্যানেলের মোহনা স্রোতের কারণে বিপদজনক থাকে বর্ষার সময়। কিন্তু মৌলভীর হাট-আবুপুর চ্যানেলে অতিরিক্ত স্রোত, বাতাস বা বার বার পলি জমার মত সমস্যা নেই। এ চ্যানেল কালীগঞ্জ ও মিয়ারচরের থেকে অনেক উত্তম। সময় ও খরচ বাচার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাও নিরাপদ হবে যাত্রীদের জন্য।

এ বিষয়ে বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা (যুগ্ম পরিচালক) এবং বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। যদি সার্বিক দিক থেকে নিরাপদ ও ভালো হয়, তবে অবশ্যই চ্যানেলটি সচল করা হবে। ইতোমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি লঞ্চ মাস্টারদের কাছ থেকে শোনার পর তাদের লিখিত আকারে দিতে বলেছি। সেটি পেলে নিয়মানুযায়ী আমাদের এক্সপার্টদের সহায়তা নেওয়া হবে। সার্বিক দিক থেকে যদি তারা মনে করেন এ চ্যানেলটি নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী হবে, তাহলে সচলের উদ্যোগ নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৯
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।