মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে দুটি চেক মূলে সোনালী ব্যাংক আদিতমারী শাখায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব হিসাব নম্বরে টাকা জমা দেন তার অফিসের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলম।
জানা গেছে, উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোবদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রুটিন মেইনটেন্যান্সে ৪০ হাজার এবং স্লিপ প্রকল্পের ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।
সেই বিল উত্তোলনে নিরুপায় হয়ে আদালতের আশ্রয় নেন বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ মামলা করতে বিধিমতে প্রথমে অভিযুক্তকে লিগ্যাল নোটিশ দেন তিনি।
লালমনিরহাট জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটনের মাধ্যমে গত ৬ নভেম্বর স্বাক্ষরিত একটি লিগ্যাল নোটিশ শিক্ষা অফিসার বরাবরে পাঠানো হয়। যেখানে নোটিশ পাওয়ার তিন কর্মদিবসের মধ্যে আত্মসাৎকরা দুই প্রকল্পের ৯০ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নম্বরে দিতে বলা হয়। অন্যথায় সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অপরাধে কেন দুর্নীতি দমন আইনে মামলা করা হবে না তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা জানেত চাওয়া হয়।
লিগ্যাল নোটিশের বরাত দিয়ে সোমবার (১১ নভেম্বর) 'টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষা অফিসারকে সভাপতির লিগ্যাল নোটিশ' শিরোনামে বাংলানিউজে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বেরিয়ে আসে শিক্ষা অফিসের দুর্নীতির চিত্র। শিক্ষা অফিসার উপজেলার দীঘলটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কয়সার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রুটিন মেইনটেন্যান্সে ও স্লিপ প্রকল্পের বরাদ্দও উত্তোলন করে নিজের কাছে রাখেন।
অবশেষে আত্মসাৎ করতে ব্যর্থ হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে দুটি চেক মূলে বিদ্যালয় তিনটির স্ব-স্ব হিসাব নম্বর সোনালী ব্যাংক আদিতমারী শাখায় জমা করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলম সেই চেক ব্যাংকে জমা করেন।
আদিতমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম খন্দকারের অফিসে একাধিক বার গিয়েও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোেন কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, গোবদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দীঘলটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কয়সার উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রুটিন মেইনটেন্যান্সে ও স্লিপ প্রকল্পের ভ্যাট কর্তন করে পাওনা এক লাখ ৯৯ হাজার একশ টাকা অফিস হিসাব নম্বরের দুটি চেক মূলে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে অর্থ বছর শেষ হওয়ার ৫ মাস পরে কেন পরিশোধ করা হলো সে বিষয়টি তার জানা নেই বলেও জানান তিনি।
সোনালী ব্যাংক আদিতমারী শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোতাহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, অফিস ছুটির প্রাক্কালে শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী দুটি চেক মূলে তিনটি বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে মোট এক লাখ ৯৯ হাজার একশ টাকা জমা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৯
এসএইচ