আকর্ষণীয় এই পর্যটন স্পটে এত গোলাবারুদ কীভাবে আসলো এনিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মাঝে। খোঁদ উদ্ধারকারী সংস্থাও বের করতে পারেনি এর রহস্য।
সাতছড়ি উদ্যানের ভেতরে গহীন অরণ্যে র্যাব-৭ এর সিও লেফট্যানেন্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েলের নেতৃত্বে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিনগত রাত আড়াইটা থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাধিক টিভিশন ও র্যাবের ২৫ সদস্য কাজ করেন সেখানে।
মশিউর রহমান জুয়েল বাংলানিউজকে জানান, টানা ১০ ঘণ্টার অভিযানে একটি বাংকারের ভেতর জালে মোড়ানো ১৩টি রকেট লঞ্চার সেল পাওয়া যায়। এছাড়াও বেশকিছু বিস্ফোরক উদ্ধার হয়, যা ব্যবহৃত হয় রকেট ফায়ারের কাজে।
তিনি আরও জানান, কে বা কারা এগুলো রেখেছে তা জানা যায়নি। যেহেতু মাটির নিচ থেকে এগুলো উদ্ধার হয়েছে সেজন্য মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে এই ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধারের সঙ্গে এবারের উদ্ধারকৃত মালামালের সম্পর্কে রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, র্যাব বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, সাতছড়ি উদ্যান থেকে বিগত ৫ বছরে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ জব্ধ হয়েছে। এগুলো কোথা থেকে আসলো তাও কেউ জানতে পারেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও এ ব্যাপারে কোন তথ্য দিচ্ছে ন। এভাবে চলতে থাকলে সাতছড়িয়ে উদ্যানটি আকর্ষণ হারাবে বলেও মনে করছেন তারা।
এদিকে শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতছড়িতে পর্যটকদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। সকালের দিকে কিছু দর্শনার্থী আসলেও গোলাবারুদ উদ্ধারে অভিযান চলমান জানতে পেরে তারা সেখান থেকে চলে যায় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মচারী।
২০১৪ সালের ১ জুন থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দফায় ৩৩৪টি কামান বিধ্বংসী রকেট, ২৯৬টি রকেট চার্জার, একটি রকেট লঞ্চার, ১৬টি মেশিনগান, একটি বেটাগান, ছয়টি এসএলআর, একটি অটোরাইফেল, পাঁচটি মেশিন গানের অতিরিক্ত খালি ব্যারেল, প্রায় ১৬ হাজার রাউন্ড বুলেটসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করেন র্যাবের সদস্যরা।
এরপর ১৬ অক্টোবর থেকে চতুর্থ দফার প্রথম পর্যায়ে উদ্যানের গহীন অরণ্যে মাটি খুঁড়ে তিনটি মেশিন গান, চারটি ব্যারেল, আটটি ম্যাগজিন, ২৫০ গুলির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আটটি বেল্ট ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেডিও উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ ১৭ অক্টোবর দুপুরে এসএমজি ও এলএমজি’র আট হাজার ৩৬০ রাউন্ড, ত্রি নট ত্রি রাইফেলের ১৫২ রাউন্ড, পিস্তলের ৫১৭ রাউন্ড, মেশিনগানের ৪২৫ রাউন্ডসহ মোট ৯ হাজার ৪৫৪ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আবারও সাতছড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ১০টি হাই এক্সক্লুসিভ ৪০ এমএম অ্যান্টি-ট্যাংক রকেট উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ শনিবার (২৩ নভেম্বর) উদ্ধার হলো ১৩টি রকেট লঞ্চার সেল ও রকেট ফায়ারে ব্যবহৃত গোলাবারুদ।
বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯
এমএমইউ