বুধবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ক্রয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল বলেন, ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কেনার অনুমোদন চেয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
‘সুরক্ষা সেবা বিভাগকে আমরা পরামর্শ দিয়েছি, যেহেতু সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এগুলো কেনা হবে, সেক্ষেত্রে টেন্ডার প্রয়োজন হবে না। অন্য যারা এ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তারা দাম ও সরবরাহের সময় কমাতে পারে কিনা, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ’
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ কাজটি পৃথিবীতে অসংখ্য কোম্পানি করে। তাই আমার বিশ্বাস, তারা সফল হবে। একটু সমস্যা হলেও এটি আমাদের করতে হবে। কারণ ৬৭ শতাংশ অতিরিক্ত মূল্য অনেক বেশি। এতোটা হলে আমাদের কমিটির পক্ষেও এটা অনুমোদন দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
পরে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কেনার ব্যাপার ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের। কিন্তু আজকে এটা তারা প্রত্যাহার করে নিয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে আমরা পাইলট বেসিসে ই-পাসপোর্টে যাচ্ছি। তবে এখনই লার্জ স্কেলে ই-পাসপোর্টে যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আরও এমআরপি পাসপোর্ট প্রয়োজন।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, আরও ২০ লাখ এমআরপি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ দফায় ২০ লাখ এমআরপির সঙ্গে ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল কেনার জন্যও প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। পাসপোর্টগুলো সরবরাহের জন্য ‘আইডি গ্লোবাল সলিউশন লিমিটেডকে (সাবেক ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড) প্রস্তাব করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর ২০১৩ সালের ১২ জুন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এক কোটি ৫০ লাখ এমআরপি ও দেড় কোটি লেমিনেশন ফয়েল বাবদ ২৬৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় যুক্তরাজ্যের ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল দেড় কোটি এমআরপি ও দেড় কোটি লেমিনেশন ফয়েল সরবরাহ করেছে।
মন্ত্রিসভায় কমিটির বৈঠকের জন্য পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বর্তমানে পাসপোর্টের চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার। চলতি নভেম্বর মাসের ১২ তারিখে মজুদ পাসপোর্টের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯১ হাজার ৯৯৩টি। লেমিনেশন ফয়েলের সংখ্যা ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০টি। দ্বিতীয় ভেরিয়েশন অর্ডার অনুসারে সরবরাহের অপেক্ষায় আছে ১৪ লাখ ৮ হাজার পাসপোর্ট বুকলেট, যা দিয়ে সর্বোচ্চ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাহিদা মেটানো সম্ভব হতে পারে। অন্যদিকে ‘ভেরিডস জিএমবিএইচ’র সঙ্গে হওয়া চুক্তি মোতাবেক সব আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস (দেশে ৬৯টি) ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে (৮০টি মিশনে) পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু হতে আনুমানিক প্রায় ১৮ মাস সময় প্রয়োজন।
প্রাথমিকভাবে আগামী ডিসেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে সব পাসপোর্ট অফিস ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়া পর্যন্ত জনসাধারণের চাহিদা অনুযায়ী ১৮ মাস এমআরপি প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। ই-পাসপোর্ট চালুর পর পর্যায়ক্রমে এমআরপি ইস্যু কমে যাবে। তখন ই-পাসপোর্ট ইস্যু বৃদ্ধি পাবে বলে সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
জিসিজি/এইচজে