ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘পার্বত্য সমস্যা সমাধানে চুক্তির বিকল্প নেই’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
‘পার্বত্য সমস্যা সমাধানে চুক্তির বিকল্প নেই’

ঢাকা: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন ছাড়া পার্বত্য সমস্যা সমাধানের আর কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সুন্দরবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের ২২ বছর উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সন্তু লারমা বলেন, জনসংহতি সমিতির তথা জুম্ম জনগোষ্ঠীর মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

তাদের পেছনে যাওয়ার আর কোনো পথ নেই। জুম্ম জনগণ ২২ বছর ধরে চুক্তি বাস্তবায়নের অপেক্ষা করেছে। তারা সরকারকে অনেক সময় দিয়েছে। সব ক্ষেত্রেই তারা দুর্বলতার পশ্চাত্পদ। কিন্তু তাই বলে তারা অবহেলা কিংবা উপেক্ষার পাত্র হতে পারে না।

‘জুম্ম জনগণ অধিকার ও মুক্তিকামী। আর এটাই তাদের একমাত্র সম্বল। এমন ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতিতে পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম জনগণ তাদের জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণে বদ্ধপরিকর। তারা মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায়। তাই পার্বত্য অঞ্চলে বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা নিজেদের করণীয় নিয়ে আজ গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের পর ২২ বছর অতিক্রান্ত হলেও সরকার চুক্তির মৌলিক গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রেখে দিয়েছে। বলাবাহুল্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যখন সই হয়েছিল, তখনও এই সরকারই ক্ষমতায় ছিল। সেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বর্তমানে একনাগাড়ে ১১ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। পক্ষান্তরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিসহ জুম্ম জাতিগুলোর জাতীয় অস্তিত্ব চিরতরে বিলুপ্তির ষড়যন্ত্র অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।

সন্তু লারমা বলেন, বর্তমান সরকার এই চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে এগিয়ে না আসায় পার্বত্যবাসীর মধ্যে চরম হতাশা, অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে নিরাপত্তাহীন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। চুক্তি মোতাবেক বহিরাগত সেটেলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনক পুনর্বাসন প্রদান না করে এবং পার্বত্য চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ অবাস্তবায়িত রেখে সরকার উল্টো ৭২টির মধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে অব্যাহতভাবে অসত্য, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রচার দেশে-বিদেশে চালিয়ে যাচ্ছে।  

‘পার্বত্য অঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। জুম্ম জনগণ অকল্পনীয় দমন-পীড়ন, নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা এই চুক্তির বাস্তবায়ন চাই। তা নাহলে আমাদের অস্তিত্ব চরম সংকটের মধ্যে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ড. মেসবাহ কামাল, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক উ উইন মং জলি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
এসএমএকে/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।