মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অন্যতম এ সেনানী।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে রওশন আরা বাচ্চুর মরদেহ নিয়ে আসা হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রওশন আরা বাচ্চুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, জাতীয় অধ্যাপক ভাষা সংগ্রামী রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, লোক গবেষক শামসুজ্জামান খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, প্রাবন্ধিক মোনায়েম সরকার প্রমুখ।
তাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলা একাডেমি ও লেখিকা সংঘ।
রওশন আরা বাচ্চুর ছোট মেয়ে তাহমিদা বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজিতে সাইনবোর্ড দেখলে মা কষ্ট পেতেন। তিনি সব সময় এর বিরুদ্ধে বলতেন। তিনি বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। এটি হলেই আমার মায়ের আত্মা শান্তি পাবে।
আনিসুজ্জামান বলেন, ৫২ সালে তিনি ভাষা সংগ্রামী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। এত বছর বাংলা ভাষার প্রতি তার মমতা ও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের দাবি জানিয়েছিলেন। আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, রওশন আরা বাচ্চু অত্যন্ত সাহসী নারী ছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলা ভাষার প্রশ্নে তিনি সর্বদাই সোচ্চার ছিলেন।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ১৯৫২ সালে মেয়েরা প্রকাশ্যে সভা-সমিতি করতে বিব্রতবোধ করতেন। এমনিক বাইরে বেরোতেও বিধিনিষেধ ছিল। সে সময় তিনি আন্দোলন করেছেন। ভাষা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, তার স্মৃতি রক্ষার্থে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চয় কাজ হবে এবং বাংলা একাডেমি তার দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলা একাডেমি থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার পশ্চিম মণিপুরী পাড়ার বাসায়।
বাদ মাগরিব সেখানকার বায়তুল আমান জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর রাতে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিলেটের কুলাউড়া থানার উছলাপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে। সেখানে বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) সকালে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন>> ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু আর নেই
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
ডিএন/টিএ