স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের রামলোহ এলাকায় দিনে এবং রাতে ট্রাকে করে পাহাড় কেটে সেই মাঠি নিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। প্রতি ট্রাক হিসেবে মাঠিগুলো বিক্রি করা হয় বিভিন্ন এলাকায়।
এক সময় পশু-পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকতো ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর পরগনার এই এলাকাটি। বানরের জন্য বিখ্যাত ছিল এই পাহাড়ি অঞ্চল। কিন্তু নির্বিচারে পাহাড় কেটে উজার করে দেওয়ায় এসব জীব-জানোয়ার আর এখন দেখা যায় না। এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এই পাহাড় কাটা হয়েছে। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে কিছুদিন পাহাড় কাটা বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীকালে আবারও শুরু হয় মাটি কাটা। যে কারণে এলাকার পরিবেশ ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি বার বার উত্থাপন করা হলেও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম জানান, রামলোহ এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার জায়গা পাহাড় কাটা হয়েছে। গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইমদাদুর রহমান মুকুল এই মাটি কাটার নেপথ্যে রয়েছেন বলেও উল্লেখ করে তিনি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, এক সময় হবিগঞ্জে ব্যাপক বনভূমি ছিল। ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর পরগনার পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক পশু-পাখির আবাসস্থল ছিল। কিন্তু বিগত প্রায় দুই দশক ধরে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার কারণে যা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এলাকার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি পরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
আরএ