সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে খুমেকে অভিযান চালিয়ে অবৈধ কফিন কারখানা উদ্ধার করেছে দুদক। এ সময় অবৈধ কফিন কারখানা করার দায়ে সুইপার জাহাঙ্গীরকেও আটক করা হয়।
জানা যায়, হাসপাতালের মর্গের পাশে আলাদা দুটি ঘর করে একটি ঘর কারখানা আর অপরটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছেন জাহাঙ্গীর। যারাই হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে আসেন অথবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান, তাদের কফিন কিনতে বাধ্য করেন তিনি।
দুদক খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক শাওন মিয়া বাংলানিউজকে জানান, যেসময় জাহাঙ্গীরের হাসপাতাল পরিষ্কার করার কথা সেসময় তিনি কফিন বিক্রি করেন। কফিন বিক্রির সময় তাকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। জাহাঙ্গীরের আউটসোর্সিং বাতিল করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে জানান তিনি।
এছাড়া খুমেকের বর্হিবিভাগে নানা অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানে দায়িত্বত চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাড ও প্যাথলজি স্লিপ উদ্ধার হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নীরিক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও টাকার বিনিময়ে সাধারণ রোগীদের ওইসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়।
এ প্রসঙ্গে দুদক কর্মকর্তা শাওন মিয়া বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে কমিশন বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েছে এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে, ইসিজি মেশিন নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল ও ওষুধের দোকানের প্রতিনিধিদের সক্রিয় দেখা গেছে। বেশি টাকার বিনিময়ে বাইরের ক্লিনিক থেকে এ পরীক্ষা-নীরিক্ষায় আর্থিক ক্ষতি ও ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের।
গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বামী মাছুম উদ্দিন মোল্লা জানান, তার স্ত্রীকে স্লিপে লিখে ৮-১০টি টেস্ট ফাতেমা হাসপাতাল থেকে করাতে বলেন ওই বিভাগের চিকিৎসক। স্লিপের নিচে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ বললে তারা টেস্টের জন্য চার হাজার টাকা দাবি করে। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি এই সরকারি হাসপাতাল থেকে পাঁচশ টাকা দিয়ে ওই পরীক্ষা করিয়েছেন।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অভিযুক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আগে থেকে এ বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিশন বানিজ্যে জড়িত চিকিৎকদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
এমআরএম/এবি