ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি পরিচয়ে ওষুধের কাঁচামাল লুট!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
ডিবি পরিচয়ে ওষুধের কাঁচামাল লুট!

ঢাকা: ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিদেশ থেকে আনা প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ওষুধের কাঁচামাল লুট করা হয়। এর বাইরে বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয়ে মহাসড়কে ওষুধের কাঁচামাল ডাকাতি করে আসছিল চক্রটি।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিনগত রাতে রাজধানীর কলাবাগান ও রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকা থেকে ওই চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

আটকরা হলেন- অপু রোজারিও (৬০), রুহুল আমিন (৩৫) ও জামাল হোসেন (৩২)।

র‌্যাব জানায়, সড়কে ওষুধের মূল্যবান কাঁচামাল টার্গেট করে ডাকাতি করে আসছিল চক্রটি। আর এসব কাঁচামাল পরিবহনের তথ্য কার্গোর কেউ কিংবা কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কেউ তাদের সরবরাহ করতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কে তাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেন এবং ডাকাতি হওয়া এসব কাঁচামাল কোথায় বিক্রি হতো তা পরবর্তী তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও জানায় র‌্যাব।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি জানান, গত ১৪ জানুয়ারি বিদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধের কাঁচামাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের কাভার্ডভ্যানে গাজীপুরে নেওয়া হচ্ছিল। রাত সাড়ে নয়টার দিকে কালিয়াকৈর এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে কয়েকজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৬৯ ড্রাম কাঁচামাল লুট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া সেসব কাঁচামালের মূল্য প্রায় ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় ১৫ জানুয়ারি কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলাবাগান ধানাধীন পশ্চিম রাজাবাজার এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের মূল হোতা অপু রোজারিওকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে রাজশাহী থেকে রুহুল আমিন ও জামাল হোসেনকে আটক করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৬০ ড্রাম ওষুধের কাঁচামাল জব্দ করা হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি কালিয়াকৈর থানা পুলিশ এই ডাকাতদলের আরো ৬ সদস্যকে গ্রেফতারসহ ২০৯ ড্রাম কাঁচামাল উদ্ধার করে।

র‌্যাব-৪ অধিনায়ক বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি পরিচয়ে মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতির সময় তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি সেট ও রিফ্লেকটিং জ্যাকেট ব্যবহার করতেন।

এ চক্রের মূলহোতা অপু রোজারিও। তিনি ছাড়াও তার দলে আরো ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। অপু তার দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছাড়া কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। ডাকাতি কার্যক্রমের সব পরিকল্পনা সম্পন্ন করে তার দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের মাধ্যমে অন্য সদস্যদের জানাতেন। তার নির্দেশ মোতাবেক নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতি সম্পন্ন করা হতো।

আটকরা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের ওষুধের কাঁচামাল ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালের কাঁচামালসহ বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের কাঁচামাল ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এই সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।