সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পুরানগাঁও গ্রাম থেকে ছেলে শফিককে নিয়ে তার পরিবার বাড়ি ফিরছেন। এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে শফিকের ভাই সুজন মোবাইলে বিষয়টি বাংলানিউজকে জানান।
এর আগে, রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পুরানগাঁও গ্রামের আশ্রয়দাতা কাবুল মিয়ার বাড়িতে যান শফিকের পরিবার।
স্থানীয়রা জানায়, বাড়ি থেকে বের হয়ে শফিক ঢাকাগামী একটি গাড়িতে উঠে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ঘুম ভাঙলে গাড়ি থেকে নেমে রাজধানী ঢাকার রাস্তার পাশে কাঁদতে থাকে শফিক। পরে ব্যবসায়ী কাবুল মিয়া তাকে (শফিক) কুড়িয়ে পান। তখন ছোট শফিক নাম-ঠিকানা কিছুই বলতে পারেননি।
কাবুল মিয়ার পরিবারের আট মেয়ে ও দুই ছেলের সঙ্গেই বেড়ে ওঠে শফিক। ১০ বছর পেরিয়ে শফিক এখন সতের বছরের তরুণ।
সম্প্রতি ওই এলাকার শেখ জসিম নামের এক সমাজকর্মী শফিকের হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। শফিকের মা-বাবাকে ফিরে পেতে ফেসবুক লাইভে এসে শেখ জসিম এ কাহিনী বর্ণনা করেন। আর এ ফেসবুক লাইভ হওয়ার পর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ফেসবুক লাইভের সূত্র ধরে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের ধূলিহর গ্রাম থেকে কিছু লোক জসিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা শফিককে চিনেন বলে জানান। এভাবেই শফিকের পরিবারের খোঁজ মিলে। পরে ফেসবুক লাইভ দেখে শফিকের বাবা-মা যোগাযোগ করেন। তখন শফিক জানতে পারে যে, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলায় সিদলা ইউনিয়নের ধূলিহর গ্রামে। তার বাবা শহীদ মিয়া এবং মা সুফিয়া খাতুন।
এদিকে শফিককে খুঁজে পাওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও শফিকের পরিবারের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। এর মধ্যে হোসেনপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন কবির ও স্থানীয় সিদলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন রয়েছেন। এছাড়াও মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আল হেলালের ভূমিকাও ছিলো প্রশংসনীয়।
হোসেনপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন কবির বাংলানিউজকে বলেন, শফিকের খোঁজ পাওয়ার পর তার পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে আমি এ কাজে মধ্যস্থতা করি। শফিক তার পরিবারের কাছে ভালোভাবে ফিরে এসেছে জেনে ভালো লাগছে। এটা সত্যিই অনেক আনন্দের বাবা-মা তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে খুঁজে পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
আরকেআর/এনটি