রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে বরগুনা টাউনহল চত্বরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এর আগে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ধ্যায় বাসে করে বরগুনার উদ্দেশ্যে রওনা করেন এসব যাত্রীরা।
বরগুনার টাউনহল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাসের যাত্রীদের জন্য যাত্রী ছাউনি বা ওয়েটিং রুমের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ না থাকায় সর্বস্ব লুটের ভয়ে সকাল হবার জন্য ফুটপাতে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা।
এসময় দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরগুনায় আসা দুই নারী টাউনহল চত্বরে শামিমের চায়ের দোকানে বসা। তাদের কাছে প্রশ্ন করা হলো, কোন গাড়িতে আপনারা এসেছেন। তারা ভয়ে কোনো কথা বললেন না। পরে অবশ্য জানা গেছে, তারা বাস থেকে নামার পর সেখানে অবস্থানরত মোটরসাইকেল চালক (রেন্ট-এ) এবং ইজিবাইক চালকদের কাছে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাই কথা না বলে ভয়ে চুপ করে বসেছিলেন।
টাউনহল সংলগ্ন চরকলোনীর স্থায়ী বাসিন্দা রমিজ জাবের টিংকু, ছগির হোসেন টিটু, সোলায়মান মো. আল-আমিন, রাফিন বাংলানিউজকে জানান, যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ পরিবহনগুলো যখন রাত ৩টা-৪টা-৫টার দিকে অন্ধকারময় সময়ে বরগুনা টাউনহল বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে যাত্রী নামিয়ে দেয়, তখন বরগুনা সদরের বাসের টিকিট কাউন্টার বা ওয়েটিংরুমগুলো সবই থাকে শাটার আটকানো ও তালা লাগানো। এ কারণে অধিকাংশ সময়ে গভীর রাতে নারী যাত্রীদের এ স্ট্যান্ডের রেন্ট-এ মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চালকদের কাছে হয়রানির শিকারে পরিণত হতে হয়। তাই প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দেওয়া।
অধিকাংশ যাত্রীদের মতে, মধ্যরাতে বাস থেকে যাত্রী নামানোর সময় যদি নৈশকোচ পরিবহন বাস সমূহ তাদের যাত্রী সেবায় নিজ নিজ বাস টিকিট কাউন্টারগুলো খোলা রাখতো এবং ভোরের আলো বের হবার আগ পর্যন্ত যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নিতো, তাহলে যাত্রী হয়রানি ও ভোগান্তি অনেকাংশ কম হতো।
ঢাকা থেকে বরগুনায় আসা সাকুরা পরিবহনের এক যাত্রী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা টাউনহল এসে পৌঁছেছি রোববার ভোর ৪টার দিকে। সেসময়ে আমার বাড়িতে যাবার জন্য অটোরিকশায় কত টাকা ভাড়া লাগবে জিজ্ঞেস করতেই চালক ১৫০ চাইলেন। অথচ দিনে সেখানে ভাড়া মাত্র ২০ টাকা। তাছাড়া হেঁটে যেতে ভয় করায় ফুটপাতে দাঁড়িয়ে সকাল হবার অপেক্ষা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, বরগুনার পরিবহন খাতে বিপুল পরিমাণে অর্থ আয় সম্পন্ন বরগুনা টাউনহল বাসস্ট্যান্ড হলেও, এ স্ট্যান্ডের নিরাপত্তা, যাত্রী হয়রানি ও জনগণের জানমালের সুরক্ষাসহ নারীদের শ্লীলতাহানি করার মতো অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য। তারপরেও কেন জোরদার হয়নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষই ভালো জানেন।
এসময় কাউন্টারের নিয়মাবলী বিষয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সাকুরা পরিবহন, শান্তি পরিবহন, সুরভী পরিবহন, সোনারতরী বাসের চালক ও তাদের সহযোগিদের (হেলপার) সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো কথার জবাব দেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২০
এসআরএস