এমন চিত্রই দেখা গেল ‘দি সাধনা লায়নস সার্কাসে’। সেখানে প্রতিটি প্রদর্শনীতে মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেই সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন শিল্পীরা।
ভোলার পুনাক শিল্পমেলায় অন্যসব বিনোদনের পাশাপাশি রয়েছে সার্কাস প্রদর্শনী। পুলিশ লাইন্স মাঠে মাসব্যাপী এ মেলা উপলক্ষে আয়োজিত সার্কাসে ৪০টি ঝুঁকিপূর্ণ খেলার প্রদর্শন করছেন সার্কাস শিল্পীরা। শুধু শারীরিক কসরত নয়, শূন্যের উপর ভয়ানক খেলা প্রর্দশন করছেন তারা। বিশেষ করে একটি রিংয়ের মধ্যে দাঁত চেপে ধরে শুন্যের মধ্যে লাটিমের মতো নিজেকে ঘোরানো একটি ভয়ানক খেলা। খেলাটি মুগ্ধ করে দর্শকদের। দড়ির উপরে হেঁটে খেলা প্রদর্শন, শুন্যের উপর দড়ি রেখে এক পায়ে দাঁড়িয়ে অন্য পা দিয়ে কাপ পিরিচ নিক্ষেপ করে মাথায় তোলা একটি দৃষ্টিনন্দন চমকপ্রদ খেলা। ডেকার বুট, সাইকেল, রিং, খাঁচায় মোটরসাইকেল, ফুটবলের মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী, জীবন্ত শিং মাছ খাওয়াসহ ৪০টি খেলা রয়েছে। প্রদর্শনীতে ১৫ জন ছেলে, ১৫ জন মেয়ে এবং ১০ জন শিশু অংশ নিয়েছে।
সার্কাস শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দর্শকদের বিনোদনের জন্য প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ খেলা দেখিয়ে এলেও নানা সংকটে ভুগছে সার্কাস শিল্প। ভালো নেই সার্কাস শিল্পীরাও। আধুনিক প্রযুক্তির কাছে হার মানতে হচ্ছে এ শিল্পকে। কারণ টিভি, ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খেলা উপভোগ করায় বাস্তবে খেলা দেখতে আসা দর্শকের সংখ্যা খুবই কম। এরমধ্যে রয়েছে দক্ষ ওস্তাদ ও সার্কাস শিল্পী সংকট। গ্রামীণ মেলা হারিয়ে যাওয়া ও সার্কাসের প্রশাসনিক অনুমতি না পাওয়া একটি কারণ বলেও মনে করছেন শিল্পীরা।
আয়োজকরা জানান, বছরের অন্য সময়ের চেয়ে শীত মৌসুমের ২/৩ মাস মেলার উপযুক্ত মৌসুম। মেলা মাঠেই সার্কাসের আয়োজন দর্শকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। মৌসুমের তিন মাস সার্কাস শিল্পীরা কর্মমুখী থাকলেও বাকি সময় তাদের বেকার কাটাতে হয়। এতে নানা সংকটে থাকতে হয় তাদের। অনেকে নানা প্রতিকূলতায় টিকে থাকলেও কেউ কেউ অভাবের কারণে পেশা পাল্টাচ্ছেন। ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলা এবং বিনোদনের জন্য সার্কাস শিল্পকে ধরে রাখার দাবি আয়োজকদের।
‘দি সাধনা লায়নস সার্কাস’র ম্যানেজার প্রণব কুমার সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আগের মতো এখন আর ভালো অবস্থানে নেই সার্কাস শিল্প। নানা কারণে সার্কাস আজ বিলুপ্তির পথে। এ শিল্পকে ধরে রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
এমআরএ