ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাগরের আকাশসীমায় ফসকে যাচ্ছে বছরে ২০০ কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
সাগরের আকাশসীমায় ফসকে যাচ্ছে বছরে ২০০ কোটি টাকা

ঢাকা: ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের সীমানা নিষ্পত্তির প্রায় ৬ বছর হয়ে গেলেও আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। ফলে প্রতিবছর ২০০ কোটি টাকার বেশি ওভার ফ্লাইং চার্জ আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। 

জানা গেছে, বর্তমান রাডারসহ এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) সিস্টেমে এই আকাশসীমায় চলাচলকারী উড়োজাহাজগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বঙ্গোপসাগরের ওই অঞ্চল দিয়ে যেসব উড়োজাহাজ চলাচল করে সেগুলোর কাছ থেকে চার্জ আদায়ও করা যাচ্ছে না।

 

সে কারণে এখনো সমুদ্রের আকাশসীমায় ওভার ফ্লাইং চার্জ বা আর্থিক সুবিধা আদায় করছে ভারত ও মিয়ানমার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে নতুন করে মালিকানা পাওয়া সমুদ্রসীমার আকাশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে ওভার ফ্লাইং ফ্লাইট থেকে বছরে ২০০ কোটি টাকারও বেশি আয় করা সম্ভব হবে।  

সূত্র বলছে, ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্রের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ পেতে তৎপরতা শুরু করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এজন্য নতুন রাডার স্থাপনসহ অটোমেটেড এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট চালু করবে সংস্থাটি। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হবে।  

তথ্যমতে, বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত মিয়ানমারের সঙ্গে ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটারের বিরোধ নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশকে ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমার মালিকানা দেয়। অন্যদিকে, ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটারের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে।  

বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের নতুন সমুদ্রসীমা অর্জিত হলেও সেখানকার এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নেই বেবিচকের। ঢাকায় থাকা বেবিচকের রাডারটি ২০০ নটিক্যাল মাইল ও চট্টগ্রামে থাকা রাডারটি ২৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত নেভিগেশন করতে সক্ষম। এ কারণে ওই এলাকার আকাশসীমায় চলাচলকারী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে কোনও ধরনের ওভার ফ্লাইং চার্জ আদায় করা যাচ্ছে না।  

বেবিচকের এক কর্মকর্তা জানান, যে কোনও দেশের ওপর দিয়ে চলাচলকারী ফ্লাইটগুলোকে নেভিগেশন সুবিধা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট দেশকে। সমুদ্রসীমা জয়ের পর বাংলাদেশ ওই এলাকার আকাশসীমায় নেভিগেশন সুবিধা আদায়ের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আগে থেকে যেসব দেশ নেভিগেশন সুবিধা নিতো, এখনও তারাই তা নিচ্ছে।  

বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, 'আমাদের আকাশসীমায় বেশকিছু রুট আছে, যা অন্য দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। যেহেতু আমাদের সক্ষমতা বাড়ছে, আমরা এ রুটগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনব। আইকাওয়ের অনুমোদন নিয়ে এখানে নেভিগেশন পরিচালনা করব। এ রুটগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে এলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
টিএম/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।