ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, আটক ৪

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, আটক ৪ আটকরা র‌্যাব হেফাজতে।

নারায়ণগঞ্জ: নরসিংদী সদর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আটক চারজন হলেন- অভিত মিয়া (২৮), মো. পাপ্পু মিয়া (২৮), মারিয়া আক্তার মন্টি (২৩) ও মো. বাদল মিয়া (৫৮)।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাব-১১ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

এতে বলা হয়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মো. রাসেল (২৮) নামে এক ব্যক্তি র‌্যাবের কাছে একটি অভিযোগ করেন।

 অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৮ ডিসেম্বর তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন ব্যক্তি নরসিংদী জেলা আদালতের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। পরে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে অচেতন করে সেখান থেকে তাকে একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করাসহ শারীরিক নির্যাতন করা হয়। সেই নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন। ভিকটিম রাসেলকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে শুক্রবার রাতে নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের চার সদস্যকে আটক করা হয়।

আটকরা রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তারা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।

তারা অপহরণের উদ্দেশ্যে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

সুযোগ বুঝে বিভিন্ন এলাকার বিত্তশালী লোকদের অপহরণ করে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে অচেতন করে গোপন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে শারীরিক নির্যাতন করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ নিয়ে থাকেন।

অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা রাসেলের স্পর্শকাতর স্থানে গ্যাস লাইটার দিয়ে পুড়িয়ে দেন। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ওইদিন রাতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকি টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়।

২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতে অবশিষ্ট টাকা নেওয়ার জন্য রাসেলকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসযোগে নরসিংদীর শাপলা চত্বরে আসার পর রাসেল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে মাইক্রোবাস থেকে নেমে ডাকাত, ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করেন।

তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অপহরণকারীরা তাকে ফেলে রেখেই দ্রুত পালিয়ে যান। পরে রাসেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে র‌্যাব-১১ কাছে একটি অভিযোগ দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল নজরধারীর মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে নরসিংদী সদর থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে আটক করে।

আটক চারজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।