ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবশেষে হদিস মিলল নারায়ণগঞ্জের নিখোঁজ সেই পরিবারের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
অবশেষে হদিস মিলল নারায়ণগঞ্জের নিখোঁজ সেই পরিবারের .

নারায়ণগঞ্জ: এক সপ্তাহ পরে অবশেষে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বাগে জান্নাত এলাকা থেকে ব্যবসায়ী, তার স্ত্রী ও স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়ের নিখোঁজ রহস্যের জট খুলেছে।

৭ দিন নিখোঁজের পরে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে রাজধানীর মিরপুরে খালার বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা ব্যবসায়ী ও তার দুই স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। গৃহবধূ মুক্তা ঘর ছাড়ার অভিমানে এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন বাবা ও দুই মেয়ে।

শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী তোবারককে পুলিশ হেফাজতে ও দুই মেয়েকে নানীর হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মোবাইল ট্র্যাকিং অনুসারে গৃহবধূর সর্বশেষ অবস্থান চট্টগ্রাম পাওয়ার পর তার সন্ধান মিলেছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের পথে রয়েছেন। মূলত স্বামীর সঙ্গে অভিমান করেই ঘর ছাড়েন তিনি।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বাগে জান্নাত মহল্লায় সিরাজুল ইসলামের বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন ব্যবসায়ী তোবারক হোসেন (৪৪)। তিনি শহরের বঙ্গবন্ধু রোডস্থ লুৎফা টাওয়ার সংলগ্ন সড়কের ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানে গার্মেন্টের তৈরী পোশাকের বেচাকেনা করতেন। ওই ফ্ল্যাটে তোবারক হোসেনের সঙ্গে তার স্ত্রী মুক্তা (৩০) ও দুই মেয়ে ফারিয়া (৯) ও ফাহমিদা (৬) থাকতেন।

বড় মেয়ে ফারিয়া চাষাঢ়া বন্ধু স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণি ও ফাহমিদা একই স্কুলের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।  

তোবারক হোসেন মিরপুর ব্লক বি গাবতলী ১ম কলোনী জব্বার হাউজিং বাড়ি নং ১৭ সি/ডি এলাকার রেজাউল হকের পুত্র। তোবারকের বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন। তার এক খালা বর্তমানে মিরপুর সেকশন ৬ এর কেন্দ্রীয় মসজিদের বিপরীতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী তোবারক, তার স্ত্রী মুক্তা ও দুই মেয়ে ফারিয়া ও ফাহমিদাকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুরে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে চাষাঢ়ার বাসা থেকে বের হন। তবে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তারা আর ওই বাড়িতে ফিরে আসেননি।  

তোবারক ও মুক্তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় মুক্তার মা মেহের বেগম ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার সদর মডেল থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। পরে সদর মডেল থানার এসআই সাব্বির ঘটনাস্থলে তদন্তে যান। ওই ফ্ল্যাট বাসায় গিয়ে দেখা গেছে ঘরের ভেতরে গার্মেন্টের অসংখ্য পণ্য স্তুপীকৃত রয়েছে। ঘরের সমস্ত মালামালই ছিল।

ওই বাড়ির কেয়ারটেকার মন্টু মিয়া জানিয়েছিলেন, তোবারক ও তার পরিবার ৩-৪ মাস পূর্বে ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি তোবারক ও দুই মেয়েকে একসঙ্গে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। তখন তোবারক তাকে (মন্টু মিয়া) জানান, তারা সপরিবারে বেড়াতে যাচ্ছেন। কয়েকদিন পরে ফিরবেন। তবে তোবারকের স্ত্রী মুক্তা কখন বেরিয়েছিলেন সেটা তিনি দেখেননি।

এদিকে গণমাধ্যমে একই পরিবারের ৪ জন নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুরে খালার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী তোবারক ও দুই মেয়ে ফারিয়া ও ফাহমিদাকে উদ্ধার করা হয়।

সদর মডেল থানার এসআই সাব্বির জানান, তোবারককে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। দুই মেয়েকে নানীর হেফাজতে দিয়ে দেয়া হয়েছে। তোবারক জানিয়েছেন, মুক্তার সঙ্গে তার ঝগড়া হয়েছিল। এরপর মুক্তা তাকে বলেছেন তিনি তার মায়ের বাসায় চলে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি তার মায়ের বাসায় যাননি।  

স্ত্রী মুক্তা ঘর ছাড়ায় অভিমানে ব্যবসায়ী তোবারকও তার দুই মেয়েকে নিয়ে খালার বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।