ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনা জনসম্মুকে আনার দাবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনা জনসম্মুকে আনার দাবি

ঢাকা: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল, কেনইবা এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল, কারা এর কৌশলী ছিল, এর পেছনের ঘটনা কী?- তার আসল তথ্য একটি কমিশন গঠন করে জনসম্মুখে আনার দাবি জানিয়েছে বিশিষ্টজনেরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড: হত্যাকাণ্ডের বিচার ও আমাদের অনুভূতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এ দাবি করেন।

আলোচকরা বলেন, ১৯৭৫ সালে যারা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, যারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তারা একইসূত্রে একই গোষ্ঠী হয়ে সরকার গঠনের দুই মাসের মাথায় এই পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর সরকার ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যেভাবে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে এনেছে, এটি বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

তারা বলেন, বর্তমান সময়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল, করা ইন্ধন জুগিয়েছিল, তাদের খুঁজে বের করে জনসম্মুখে আনতে হবে।

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র কখনোই শেষ হবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের শক্তি টিকে থাক এটা চায় না, তারাই অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিরাই পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার টিকে আছে বলেই বিচার আমরা করতে পেরেছি।

কামরুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় বিচার হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। শেষ পর্যন্ত আমরা বিচার করতে পেরেছিলাম। এখন আপিল বিভাগে যাবে বিষয়টা। ইনশাল্লাহ দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিল শেষ হবে।

সাবেক পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক বলেন, মাত্র এক বছর পাঁচ মাসের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। সাত হাজার আসামি করা হয়। ৪৫০ জনের সাক্ষী নেওয়া হয়। এরমধ্যে ২৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এত বড় মামলা মাত্র তিন বছরে রায় দেওয়া খুব কঠিন কাজ ছিল।

তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দূরদর্শীতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। তার সৎ সাহস আছে বলেই তিনি পেরেছেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। আমি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম এই কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ঘটনাস্থলে গেলেন। তিনি অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন।

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার হত্যাকাণ্ড বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। সেদিন সেনাবাহিনীর কিছু চৌকস সেনা নায়কদের হত্যা করা হয়। মাত্র তিন বছরে হত্যাকারীদের নিয়ে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন। আসামিদের মধ্যে ৬৭ শতাংশের সাজা হয়েছে।

তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল, তা এখনও জনসম্মুখে আসেনি। দেশের জনগণ পেছনের ঘটনা জানার অধিকার রাখে।

বাংলাদেশ অনলাইন এক্টিভিষ্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়ের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ, সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
পিএস//টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।