ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুর্ঘটনায় পা হারানো বাবু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২০
মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুর্ঘটনায় পা হারানো বাবু

ফেনী: সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারানো ফেনীর দাগনভূঞার ফজলে আলী বাবুকে (৪০) এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়নি ইসহাক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। 

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের হাজী মোবারক আলী সাহেবের বাড়ির মৃত হাছান আলীর ছেলে ফজলে আলী বাবু গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার মাদাম বিবির হাট আছাদি স্টিল শিপ ইয়ার্ড সংলগ্ন স্থানে দুর্ঘটনার শিকার হন। ইসহাক পরিবহনের ট্রাকের (চট্ট মেট্রো : ট-০৫-০০৯৯) চাপায় গুরুতর আহত হন বাবু।

খবর পেয়ে ইসহাক পরিবহনের মালিক মো. ইসহাক মেম্বার ও ট্রাকচালক আনোয়ার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নগদ ২০ হাজার টাকা দেন এবং চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলেন। পরবর্তীতে চিকিৎসার ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। ওইদিন স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বাবুকে উদ্ধার করে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড ট্রমাটোলজি বিভাগে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জাতীয় অর্থোপেডিক্স হাসপাতাল ও পুনর্বাসনে স্থানান্তর করেন। অর্থোপেডিক্স সার্জন প্রফেসর আবদুর রব আহত বাবুর ডান পা কেটে ফেলেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করতে গিয়ে সহায় সম্বল বিক্রি করে দেন তার পরিবার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বাবু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পা হারানো বাবু লেগ স্ট্রেনের উপর ভর করে চলাচল করছে। এক সময় সুস্থ সবল লোকটি পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন আজ। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে জড়িয়ে ধরেন পঙ্গু বাবু ও তার পরিবারের লোকজন। এসময় তাদের কান্নাকাটি আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। বসতঘর ছাড়া জীবনের সব সম্বল বিক্রি করে চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশ টাকার ওষুধ সেবন করতে হয়। টাকার অভাবে ওষুধ কেনাও সম্ভব হয় না।

আহত বাবু বলেন, কাজের সন্ধানে তিনি সীতাকুন্ডে যান। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ইসহাক পরিবহনের ঘাতক ট্রাকের চাপায় সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে আমার।

আহত বাবুর ছোট ভাই শওকত আলী শাহীন বলেন, আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় এ পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইসহাক পরিবহনের মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণের ন্যায্য দাবি পাওয়ার আশায় ধর্না দেওয়ার পরও ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টো হুমকি দিচ্ছে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির দাগনভূঞা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান সেলিম বলেন, ঘটনাটি বড়ই দুঃখজনক। আহতের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা ইসহাক পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২০
এসএইচডি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।