ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর লাগানো নারিকেল গাছটির বয়স এখন ৪৮ বছর

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
বঙ্গবন্ধুর লাগানো নারিকেল গাছটির বয়স এখন ৪৮ বছর

খুলনা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই খুলনা সফরে যান। ওই সময় খুলনা সরকারি মহিলা কলেজে এসেছিলেন তিনি। 

সে সময় কলেজ প্রাঙ্গণে একটি নারিকেল গাছ রোপণ করেন জাতির পিতা। গাছটি দীর্ঘ ৪৮ বছরে অনেক বড় হয়েছে।

ফলও দিয়েছে অনেক।

মহানগরীর বয়রাস্থ খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে আরও কিছু নারকেলগাছ থাকলেও এই একটি গাছের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি।  

শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে লাগানো নারিকেল গাছটি দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। নারিকেল গাছটিকে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। গাছটি নিয়মিত পরিচর্যাও করছে খুলনার হর্টিকালচার সেন্টার।

নারকেল গাছটি ঘিরে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিময় এ গাছের ফল থেকে ১৩ চারাও তৈরি করা হয়েছে। যা ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানসহ কয়েজন নেতা-কর্মী নিয়ে ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই  সরকারি মহিলা কলেজে এসেছিলেন। এই সফরে তিনি নারিকেল গাছের চারা নিজ হাতে রোপন করেন। সেই সময়ে কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন আনোয়ারা বেগম রানু।  

বঙ্গবন্ধুর রোপন করা নারকেল গাছ, সেই গাছের নারকেল থেকে চারা।  বর্তমান কলেজ চত্বরে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তেই দেখা মিলবে নারিকেল গাছটি। গাছটির চারপাশে টাইলস এবং এসএস পাইপের সুদর্শন চত্বর। তার পাশেই রয়েছে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য। পাশে ফুলের বাগান। সেখানে রং-বেরঙের ফুল ফুটেছে। ২০১১ সালে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক আবক্ষ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন।  

জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে রোপিত নারকেল গাছটি দীর্ঘদিন ধরে যত্নহীন পড়ে ছিল। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দা লুৎফুন নাহার ২০১০ সালে কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান।  

এরপর কলেজের ইতিহাস জানার জন্য ঘাঁটতে থাকেন বিভিন্ন নথিপত্র। পেয়ে যান কিছু সাদা-কালো ছবি। এসব ছবিতেই ফুটে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর নারিকেলগাছ লাগানোর চিত্র। পরে কলেজের পুরোনো কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে নারিকেলগাছটি শনাক্ত করা হয়।  

ঐতিহাসিক ছবিগুলোতে তৎকালীন অধ্যক্ষ আনোয়ারা বেগম ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমানও রয়েছেন।

কলেজের গণিত বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিষ্টি গুপ্ত বাংলানিউজকে বলেন, কলেজে এসে জানতে পারি এ গাছটি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো। গাছটি দেখে কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে না দেখতে পেরেও তার লাগানো গাছ দেখে কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা গর্বিত।

খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক টি এম জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারিকেল গাছটি নিজ হাতে লাগিয়েছিলেন। আমি এই কলেজে যোগদানের পর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে আরও ছড়িয়ে দিতে গাছের নারকেল দিয়ে চারা তৈরি করার ব্যবস্থা করি। যার ধারাবাহিকতায় ১৩টি নারিকেলের চারা তৈরি করা হয়েছে।  

যা ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।  

অধ্যাপক টিএম জাকির হোসেন বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আমাদের এখানেও গাছটির চারা রোপন করা হবে। দেশপ্রেমিক এই মহান নেতার স্মৃতি যাতে সব জায়গায় ছড়িয়ে যায় সেজন্য-ই এ উদ্যোগ।

তিনি দাবি করেন, খুলনায় একমাত্র এই কলেজটিতেই বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো নারিকেল গাছ রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
এমআরএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।