রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকা ঘুরে নিম্নআয়ের মানুষের সাথে কথা বলা এমনটাই জানা যায়।
মোহাম্মদপুর ভাঙা মসজিদ বস্তি এলাকার বাসিন্দা টায়ার বিক্রেতা মো. জামাল বলেন, আজ ১৫ দিন পরে বাসা থেকে বের হয়েছি।
কোনো ত্রাণ বা সাহায্য পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি লোকজন আমাদের কিছু দেয় না। যাদের আছে তাদেরকেই বেশি করে দেয়। আমার ইনকামে পরিবার চলে। টায়ার বেচাকেনা করে দিনে ৩০০- ৪০০ টাকা পাই। এই টাকা নিয়ে ঘরে ফিরে যামু।
মিরপুর ৭ নম্বরের রিকশা ও ভ্যান গাড়ি মেরামত মিস্ত্রি আব্দুল হক বলেন, ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আর বাসা থেকে বের হই নাই। ২২ এপ্রিল বুধবার বাসা থেকে বের হইছি। জমানো টাকা পয়সা যা ছিল তা দিয়ে প্রায় একমাস চলেছি। এখন আর হাতে কোন টাকা পয়সা নেই। ক্ষুধার জালায় রাস্তায় নেমেছি কাজ করতে। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জোগাতেই রাস্তায় বেরিয়ে আসা। এরমধ্যে আমি মাত্র একদিন ত্রাণ পেয়ে ছিলাম। এতে ছিল ২ কেজি চাল,১ কেজি আলু ,১ কেজি লবণ। এখন আর ত্রাণ পাইতেছি না। করোনা ভাইরাস উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার জন্য আমার রাস্তায় নামা।
মিরপুর ১১ নাম্বার ভাসানী হোটেলে এলাকার বাসিন্দা টুপি ও মাস্ক বিক্রেতা মো. মনোয়ার। তিনি বলেন, আগে কাজ করতাম বেনারসি শাড়ির কারচুপির। লকডাউন এ সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। এখন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে টুপি ও মাস্ক বিক্রি করছি। বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় ঘুরে ঘুরে এ কাজ করছি। প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেচাকেনা করি। এই নিয়েই কোনমতে বাবা, মা আর সন্তানদের নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছি। আমি এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে কোন প্রকার ত্রান পাইনি।
বাউনিয়া বাঁধ পুকুর পাড় বস্তির পরিচ্ছন্ন কর্মী মোঃ মুক্তার বলেন, গত দুই মাস ধরে কোন বেতন পাই না। প্রতিদিনই কাজের জন্য ঘর থেকে বের হতে হয়। ধার দেনা করে এখন পর্যন্ত চলছে। আমি গ্রামের বাড়ি থেকে সুদে টাকা এনে পরিবার নিয়ে চলছি। আমাদের কেউ সাহায্য করে নাই। কারো কাছ থেকে কোন প্রকার ত্রাণ পাইনা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২০
এমএমআই/এমএমএস