মঙ্গলবার (৫ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা যায়।
মিরপুর-১ নম্বরে রিকশার মেকার মো. মমিন বলেন, আমার অবস্থা খুব খারাপ।
তিনি বলেন, বাসায় খাবার নেই, চাল-ডাল নেই। মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে খাবার জোগাতে বাধ্য হয়ে এখন কাজ করতে সড়কে নেমেছি। কতোদিন আর ঘরে বসে থাকা যায়? যে টাকা কামাই করি এতে চলতে পারছি না পরিবার নিয়ে। কোনোরকমে পান্তা আর ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে আছি।
মিরপুর-৬ নম্বরে বিসমিল্লাহ গ্যাস ওয়ার্কসের মালিক মো. কালাম বলেন, আমার দোকানে গাড়ির ছোটখাটো পার্স লাগানো হয়। এ সাধারণ ছুটির মধ্যে গাড়ি চলাচল বন্ধ। এ কারণে কাজও কম। খারাপ সময় যাচ্ছে। ঠিকমতো দোকানের ভাড়া দিতে পারছি না বলে মালিক দোকান ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছেন। মালিককে ভাড়া একসঙ্গে দিতে পারছি না। ভেঙে ভেঙে দিতে চাচ্ছি তাও নিতে চাচ্ছেন না। কোনো বেচাবিক্রি নেই। কোনো রকমে চলছি।
তিনি বলেন, দোকান মালিক বলেছেন একসঙ্গে ভাড়া না দিতে পারলে অগ্রিম তিন মাসের ভাড়া কাটানোর পরে দোকান ছেড়ে দিতে। আমি এ খারাপ সময়ের মধ্যে কীভাবে এক মাসের দোকান ভাড়া ১২ হাজার টাকা জোগাড় করবো? সড়কে এখনো পরিবহন ঠিকমতো চলছে না। গণপরিবহন রাস্তায় চলা শুরু করলে ব্যবসা ভালো হবে।
মিরপুর-১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের নিশি প্লাজার সামনে বসা মুচি বকুল সরদার বলেন, লোকজন কম আসছে জুতা ঠিক করতে। আমি সাতদিন পরে এখানে জুতা ঠিক করতে বসেছি। সবসময় এখানে বসেই জুতা ঠিক করি। গত ২৬ মার্চ যখন সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে তখন থেকেই আমি টানা ১৫ দিন বাসায় ছিলাম। এরপর একদিন বের হলে তিন দিন বাসায় থাকতাম। তখন কখনো এক-দুইশ সর্বোচ্চ তিনশ’ টাকা রোজগার করেছি।
কতো টাকা রোজগার করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল ৭টার দিকে এখানে এসে বসেছি। এখন বেলা বাজে ১টা। মাত্র ৪৫ টাকার কাজ করেছি। খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিন পার করছি। করোনার ভয়ে মানুষজন ঘর থেকে বের হয় না। এ কারণেই কাজও কম।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৫ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২০
এমএমআই/আরবি/