ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্রীপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি হলো গড়াই নদীর বেড়িবাঁধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
শ্রীপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি হলো গড়াই নদীর বেড়িবাঁধ

মাগুরা: আগ্রাসী গড়াই নদীর ভাঙনে অস্তিত্ব হুমকিতে পড়েছে শ্রীপুর উপজেলার দোরান নগর গ্রামের বসবাসকারীরা। গ্রামের রাস্তা, গোসলের ঘাট, মন্দির, বসতবাড়িসহ নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে বছর কয়েক আগে।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙন নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন এই এলাকার মানুষ। আগ্রাসী গড়াই এখনই বুঝি কেড়ে নিলো শেষ আশ্রয়টুকু, সে দুশ্চিন্তা সব সময়।

দোরান নগর মধ্যপাড়ার অসহায় মানুষের কল্যাণে সর্বনাশা গড়াই নদীর ভাঙনের করাল গ্রাস থেকে নিজেদের শেষ সম্বল ভিটে মাটি বাঁচানো জন্য ‘আমরা স্বপ্নবাজ’ নামে একটি স্বেচ্চাসেবী সংগঠনের যুবকরা ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মাণ করেছেন বেড়িবাঁধ।

এক সপ্তাহ সময় নিয়ে স্বেচ্ছা শ্রমের বিনিময়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন। সরকারি অফিসে অনেকবার দরখাস্ত দিয়েও কোনো ফল না হওয়ায় নিজেরাই বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শুরু করেন।

গত বর্ষা মৌসুমে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা ধসে যায় নদীর স্রোতে। এরই মধ্যে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছেন অনেকেই। বাকিরাও আছেন শঙ্কায়। কোথাও আবার জিআরও ব্যাগ নদীতে ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন এ
সংগঠনের যুবকরা।

সংগঠনটির সভাপতি মনোজিৎ বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল, কলেজ বন্ধ রয়েছে, যারা বাইরে চাকরি করেন তারাও বাড়িতে এসেছেন। প্রতিবছর গড়াই নদীর ভাঙনে আমাদের দোরান নগর গ্রামের রাস্তা, বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে স্বপ্নবাজ সংগঠনের সদস্যরা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছেন। আমাদের ইচ্ছা আছে আরো দুইটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করব। কিছুটা আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাই সম্ভব হচ্ছে না। তবে ফান্ড কালেকশনের চেষ্টা করছি।

সংগঠনের সদস্য অসীম কুমার মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, নদীর এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে। আমাদের ভাগ্যটাই খারাপ আমরা প্রতিবছর ভাঙনের মুখে পড়ছি। এতে বাড়ি-ঘর, রাস্তাসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এই বেড়িবাঁধ তৈরি করতে বাঁশ, লোহার পেরেক, ইট খোয়া, বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের  এই বেড়িবাঁধ তৈরিতে প্রায় ১৫শ থেকে ২ হাজার বাঁশ লেগেছে। খরচ হয়েছে আনুমানিক সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা।

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসিন কবির বাংলানিউজকে বলেন, সমাজে যারা স্বেচ্ছাশ্রমের বিনিময়ে উন্নয়নমূলক কাজে এগিয়ে আসে তাদের সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।