ওই ওয়ার্ডে ৯২ জনের মধ্যে প্রায় ১০ জন উপকারভোগীর নামের পাশে ইউপি সদস্য মো. কামরুল মুন্সির নিজস্ব লোকের নম্বর দেওয়া হয়েছে। ওইসব উপকারভোগীদের নিজেদের মোবাইল ফোন থাকা সত্ত্বেও ইউপি সদস্য অসৎ উদ্দেশে তার নিজস্ব লোকের নম্বর দিয়েছেন।
এছাড়াও সরকারি সহযোগিতা প্রদানে স্বজন প্রীতি এবং বিভিন্ন ভাতা ভোগীদের কার্ড দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে পঞ্চকরণ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ইউপি সদস্য কামরুল মুন্সির বিরুদ্ধে। যদিও তিনি বিএনপির আমলে যুবদলের নেতা ছিলেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট হওয়ায় নানা অপকর্ম করেও বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন তিনি।
ওই ওয়ার্ডের তালিকায় দেখা যায়, মো. সরোয়ার মুন্সি, দুলু বেগম, মো. রুস্তুম মুন্সি, ফুলজান বেগম, তহমিনা বেগমসহ কয়েক জনের নামের পাশে ইউপি সদস্য মো. কামরুল মুন্সির কাছের মানুষদের নম্বর দেওয়া হয়েছে। ইউপি সদস্য কামরুল মুন্সির কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত হাফিজুরের দুটি নম্বর (০১৩১৬-০১১০১৫, ০১৮৬৬৮৭৬৩০৪) রয়েছে দুই জনের নামের পাশে। নামের পাশে নিজেদের নম্বরের জায়গায় অন্য লোকের নম্বর থাকার খবরে ভুক্তভোগীরা ইউপি সদস্যকে ফোন করলে সামনা সামনি কথা বলার কথা বলে ফোন কেটে দেন ইউপি সদস্য।
উপকারভোগী সরোয়ার মুন্সির ছেলে আসলাম মুন্সি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ২৫০০ টাকার সহযোগিতার জন্য ইউপি সদস্য আমার বাবার নাম দিয়েছে। কিন্তু ওই তালিকায় আমার বাবার নামের পাশে অন্য লোকের মোবাইল নম্বর। আমি বিষয়টি মেম্বরকে জানালে তিনি সামনা সামনি কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এছাড়াও আমার মা ফাতেমা বেগম এবং ভাতিজা আরিফ মুন্সিকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার জন্য সাড়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন আমার বাবার কাছ থেকে। এছাড়াও অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছেন পঞ্চকরণ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ইউপি সদস্য কামরুল মুন্সি।
এসব অনিয়মের বিষয়ে কামরুল মুন্সি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে তালিকা চেয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তালিকা তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু যখন তালিকা করা হয়েছে তখন জানতাম না যে টাকা দেওয়া হবে। তাই যাদের নম্বর আমার কাছে ছিল না, তাদের নামের পাশে আশপাশে যারা ছিল তাদের নম্বর দিয়েছি। পরবর্তীকালে উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে তালিকায় যার নাম তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে তালিকা সংশোধনের জন্য পাঠিয়েছেন। আমরা সেই অনুযায়ী তালিকা দিয়েছি।
রোববার (১৭ মে) বিকেলে পঞ্চকরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, ইউপি সদস্য কামরুল মুন্সি ও দেলোয়ার খলিফার ওয়ার্ডের তালিকায় কিছু সমস্যা ছিল। সেগুলো আমরা সংশোধন করে দিয়েছি।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো কামরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়া তালিকা আমরা যাচাই বাছাই করেছি। যেসব তালিকায় অনিয়ম পাওয়া গেছে, সেগুলোকে সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কেন এভাবে হয়েছে সেগুলো ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
আরএ