ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’: মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কাজ শুরু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’: মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কাজ শুরু 

সাতক্ষীরা: ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার ১৪৭টি সাইক্লোন শেল্টার ও সতেরশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের সাধারণ মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। 

রোববার (১৭ মে) রাত ৮টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি বিষয়ক মিট দ্য প্রেসে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল এসব তথ্য জানান।  

এ সময় তিনি বলেন, সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে আশ্রয়কেন্দ্র ভিত্তিক টিম গঠন করা হয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা সবার শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় এবং কারো করোনা উপসর্গ থাকলে তাকে আশ্রয় কেন্দ্রেই আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী একজন মানুষও যাতে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে না থাকে, সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের তিন জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তিনটি ব্লকে দায়িত্ব দিয়ে স্ব স্ব এলাকায় পাঠানো হয়েছে।  

এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, করোনা এবং ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ দুটি বৈপরীত্য দুর্যোগ, যা মোকাবিলা করা আমাদের জন্য একটা বড় পরীক্ষা। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, গর্ভবর্তী নারীদের জন্য ধাত্রী প্রস্তুত রাখা, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ইফতারি ও সেহেরির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।  

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে শ্যামনগর ও আশাশুনিতে পাঠানো হয়েছে। তারা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন।  

এছাড়া প্রাণিসম্পদ দপ্তরকে ইউএনওদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গরু-ছাগলসহ মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদসমূহ উঁচু জায়গায় নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলীয় শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে জেলার সাতটি উপজেলায় ইতোমধ্যে ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, জেলার ৯৪ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ। বাকিটুকু সোমবারের মধ্যে কেটে ঘরে তোলার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

জেলা প্রশাসক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। বিজিবি, কোস্টগার্ড, নেভি, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত রয়েছে। একটিও প্রাণহানির ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য সবার সহযোগিতায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হবে।  

মিট দ্য প্রেসে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন পড়ে শোনান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী।  

এর আগে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

সভায় জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন শায়ায়েত, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক হুসাইন শওকতসহ বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।

সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টরা যুক্ত হন।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।