ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাস্ক ছাড়াই বেড়েছে চলাফেরা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২০
মাস্ক ছাড়াই বেড়েছে চলাফেরা

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ ঠেকাতে নানাভাবে কাজ করছে সরকার। তারপরও দিন দিন বেড়ে চলেছে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা। অথচ এ পরিস্থিতিতেও বাইরে যাচ্ছে মানুষ। শুধু তাই নয়, তাদের বেশিরভাগের মধ্যেই করোনা প্রতিরোধে ন্যুনতম স্বাস্থ্যবিধিগুলো মানার কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সারা দেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাতেও একই চিত্র। করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও সশস্ত্র বাহিনী।

কিন্তু তাদের সচেতনতা বার্তা, কঠোর নজরদারি যেন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না বাইরে বেরনো মানুষ। অনেকেই মাস্ক মুখে না দিয়ে, নিরাপদ দূরত্ব না মেনেই দৈনন্দিন কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে মাস্ক ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে সে আহ্বান মানছেন না অনেকেই।

সোমবার (১৮ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর একাধিক কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায় এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। বাজারে আগত অনেক ক্রেতার মুখেই মাস্কের বালাই নেই। হাতে নেই গ্লাভস। একই হাল বিক্রেতাদেরও।  

এরই মাঝে অনেককেই রাস্তার দোকানে চাসহ বিভিন্ন খাবারো খেতে দেখা যায়। অনেকে আবার সন্তান কোলে নিয়েও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাফেরা করছেন।  

দুপুরে হাতিরপুল কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা এক নারীর কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে বলেন, পরিনি কারণ আমি রোগ-বালাই ভয় পাই না। আর তাছাড়া মাস্ক পরতে কেমন একটা অস্বস্তি বোধ হয়।

আরেক পুরুষও একই কথা জানান। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য মাস্ক পরা উচিত, কিন্তু আমার কাছে এসব ভালো লাগে না। মাস্ক পরলে মুখ ঘেমে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়। তাই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করি। তবে অবশ্যই সাবধানও থাকার চেষ্টা করি।


এদিকে বাইরে চলাফেরা করা সবাই মাস্ক না পরে কেউ কেউ পরলে খুব একটা লাভ নেই উল্লেখ করে নাজনীন সুলতানা নামে মাস্ক পরে বাজার করতে আসা এক তরুণী বলেন, আমি তো মাস্ক পরে এসেছি, কিন্তু আরেকজন তো পরেনি। সে তো আমার কাছে চলে আসছে। তার কাছ থেকে দূরে সরতে গেলে আবার আরেকজনের সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছি। এটা খুবই অসংগতিপূর্ণ একটা পরিবেশ। আমাদের সবারই এ সময় একটু সাবধান হয়ে চলাফেরা করা উচিত।

দোকান খোলা রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রসঙ্গে এক দোকানদার বলেন, আমি কাস্টমারদের বলছি, ৩ মিটার দূরে দূরে দাঁড়ান। একসঙ্গে দুই জনের বেশি দাঁড়াবেন না। কিন্তু অনেকেই এসব কথা শুনছে না। তারা ভিড় করছে। বারবার অনুরোধ করার পরও দেখা যাচ্ছে কিছু মানুষ জনসমাগম পরিহার করতে চাচ্ছে না। আমাদের তো বোঝা উচিত, করোনা মোকাবিলা করতে হলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

করোনার ঝুঁকি এড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বাইরে চলাফেরা করাদের মাস্ক পরতে বলছে। তারা জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে নির্গত ভাইরাস থেকে করোনা ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। তাই অন্যকে রক্ষার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তি বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরবেন।  

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো অধিক জনসংখ্যার দেশ, যেখানে নানা প্রতিকূলতায় যথাযথ সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউন মেনে চলা কঠিন, সেখানে বাইরে গেলে অবশ্যই সবার মাস্ক পরা উচিত। বিশেষ করে জনসমাগম হয় এমন স্থান, যেমন- হাটবাজার, রাস্তাঘাট, বাস-ট্রেনসহ অন্যান্য গণপরিবহনে কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া যাওয়া ঠিক নয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।