বুধবার (২৭ মে) রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতালে নির্মিত অস্থায়ী করোনা আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে চিকিৎসাধীন ৫ জন রোগী মারা যান।
ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্টদের ধারণা, অস্থায়ীভাবে নির্মিত ওই ইউনিটের এসি বিস্ফোরণ হলে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপরও তদন্ত সাপেক্ষে অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তারা।
জানা গেছে, ইউনাইটেড হাসপাতালের মূল ভবনে অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে করোনা রোগীর জন্য প্রস্তুতকৃত ওই ইউনিটে যথেষ্ট অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিলো না। ফলে স্বল্প সময়ের এ আগুনে চিকিৎসাধীন ৫ জন প্রাণ হারান।
ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক নিয়াজ আহমেদ বলেন, আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে সরাসরি বলা যাবে না। বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখতে হবে।
পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ছিল কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। তবে যেখানে আগুন লেগেছে সেটি মূল ভবনের বাইরের অংশ এবং অস্থায়ী। সেখানে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা অপ্রতুল ছিল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ইউনিটটিতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ওইভাবে ছিলো না। কিন্তু ইউনিটের কাছেই ফায়ার হাইড্রেন্ট ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বোধয় ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার করতে পারেনি।
তিনি বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের মূল ভবনের পেছনের দিকে টেম্পোরারি মেটেরিয়ালস দিয়ে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়। হার্ডবোর্ড, পারটেক্স নানা রকম জিনিস দিয়ে এই আইসোলেশন ইউনিট তৈরি ছিল। সেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি রুম আছে। চারটি রুমের একটি রুমে এসি দুমড়ানো-মুচড়ানো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। চারটি রুেই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে এসি বিস্ফোরণ হয়ে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে আইসোলেশনে থাকা করোনা সাসপেক্ট ৫ জন রোগী মারা যায়। নিহতরা করোনা সাসপেক্ট রোগী ছিলেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে।
তিনি আরও জানান, ওই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ডাক্তার নার্সও ছিল। তারা দ্রুত অগ্নিকাণ্ডের সময় বের হয়ে গেলও রোগীরা বের হতে পারেননি।
এদিকে গুলশান থানার (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, ইউনাইটেড হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড উপরে টিন ও চারদিকে টেম্পোরারি বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তৈরি ছিল। পাঁচটি মরদেহে আগুনের ক্ষত দেখা গেছে। মরদেহগুলো এখনো ঘটনাস্থলে আছে। তবে এ ঘটনায় আর কোনো হতাহত নেই। অন্যান্য ইউনিটের যেসব রোগীরা রয়েছেন তাদের কোনো সমস্যা হয়নি, তারা অক্ষত আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২০
পিএম/এজেডএস/আরএ