ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না সিএনজি-অটোরিকশায়

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২০
স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না সিএনজি-অটোরিকশায় স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অটোরিকশার যাত্রীরা। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালানোর সরকারি নির্দেশ মানা হচ্ছে না লালমনিরহাটের গ্রামীণ গণপরিবহন খ্যাত সিএনজি-অটোরিকশায়।

জানা গেছে, করোনা সংক্রমণরোধে সরকারি নির্দেশনায় দীর্ঘ দুই মাস দেশব্যাপী সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে সারাদেশে সব গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও লালমনিরহাটে সচল ছিল গ্রামীণ গণপরিবহন খ্যাত সিএনজি-অটোরিকশা।

তবে তখন যাত্রীর সংখ্যা কম থাকায় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায়সহ যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার দেখা যায়।

সোমবার (০১ জুন) সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তা চলাচল স্বাভাবিক করে। এ ঘোষণায় পুরো স্বাভাবিক হয়ে পড়ে লালমনিরহাটের গ্রামীণ গণপরিবহনগুলো।

দূরপাল্লার বাস ও আন্তঃনগর ট্রেন সরকারি নির্দেশ মেনে চলাচল করলেও গ্রামীণ গণপরিবহনে তা মানা হচ্ছে না লালমনিরহাটে। আন্তঃজেলা যোগাযোগে কয়েক হাজার অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও সিএনজি যাতায়াত করে এ জেলায়। ছোট ছোট এসব গণপরিবহনে ৮/১৫জন যাত্রী চাপাচাপি করে যাত্রা করে।   পার্শ্ববর্তী জেলা রংপুর ও কুড়িগ্রামের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছে এসব পরিবহন। চালক বা যাত্রী কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ব্যবহারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে করোনা ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।

অটোচালক শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, কেউ তো মাস্ক ব্যবহার করে না। মাস্ক পকেটে আছে। প্রয়োজন হলে ব্যবহার করবো। যাত্রীরা আগেই ভাড়াই পরিশোধ করায় আগের মতোই যাত্রী পরিবহন করছি। সবার যা গতি আমারও তাই হবে। সরকার বাধ্য করলে যাত্রীরা যখন ব্যবহার করবে তখন আমরাও মাস্ক ব্যবহার করবো। করোনার ভয়ে ঘরে থাকলে পেট চলবে না।

জলিল মিয়া নামে একজন যাত্রী বলেন, প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হচ্ছে। নিজের গাড়ি নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অটোরিকশায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়া গ্রামীণ পথে বাস বা ট্রেন তো নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অটোরিকশা বা সিএনজিই আমাদের ভরসা।

অপর একজন যাত্রী নরেন্দ্রনাথ বাংলানিউজকে বলেন, দূরপাল্লার বাস বা আন্তঃনগর ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। কিন্তু সেই ট্রেন বা বাস থেকে নেমে গন্তব্যে যেতে কিংবা বাসা থেকে ওই সব যানবাহনে উঠতে গ্রামীণ গণপরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। এসব গ্রামীণ গণপরিবহনে মোটেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। সরকারের উচিত এসব গ্রামীণ গণপরিবহনেও শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা করা। অন্যথায় ভয়াবহতায় রূপ নেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

লালমনিরহাট থেকে চট্টগ্রামগামী তিস্তা পরিবহনের চালক মাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশের সব নির্দেশ প্রথম দিকে ঠিক থাকে। কিছুদিন পরেই আগের অবস্থানে চলে যায়। এমনটি হলে ভয়াবহতা বাড়তে পারে। আগে বুড়িমারী থেকে একটি বাস চট্টগ্রাম পৌঁছাতে দুই/আড়াই হাজার টাকার চাঁদা গুনতে হতো। বর্তমানে পথে সেই চাঁদাবাজী নেই। ফলে নির্বিঘ্নে গাড়ি চালানো যাচ্ছে। এটা আগামী দিনেও অব্যহত রাখার দাবি জানান তিনি।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহন বলতে যাত্রী পরিবহনের যেকোনো যানবাহনকে অবশ্যই সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে হবে। এজন্য বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। গ্রামীণ গণপরিবহনকেও এ বিধি মেনে চলতে হবে। এজন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। এটা সফল করতে অভিযান চালানো হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।