রোববার (৭ জুন) সন্ধ্যা সাতটায় আয়োজনটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান এবং সঞ্চালনা করেন জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আলোচনা করেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে সম্মিলিত কণ্ঠে গাওয়া হয় 'তুমি বাংলার ধ্রুব তারা, তুমি হৃদয়ের বাতিঘর' শির্ষক গান। দেশের সকল গুলি শিল্পীরা অংশ নেনে এতে। এরপর তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় ৬ দফার বিভিন্ন দিক এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন অংশ। তারপর শুরু হয় আলোচনা।
আলোচনার মূল প্রবন্ধে ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ছিল বাঙালির জন্য নতুন দিগন্তে নতুন মুক্তির সনদ। মানুষকে নিয়ে অধিকারহীন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও দুঃখী মানুষকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর একটি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর চিন্তা। শুধু পশ্চিমা তত্ত্বের আলোকে একে সমাজতন্ত্র বললে সবটা বলা হবে না; যেহেতু এতে যুক্ত হয়েছিল স্থানীয়তা, লোক জীবন থেকে আহরিত প্রজ্ঞা ও সাংস্কৃতিক ভূমি সংলগ্নতা। তারপরও একে সমাজতন্ত্রের একটি সংস্করণ হিসেবে আমরা ধরে নিতে পারি। এবং যেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রীয় মূলনীতিগুলোর একটি ছিল সমাজতন্ত্র, ফলে সেটিকেও আমরা সেভাবে দেখতে পারি। উপনিবেশ বিরোধী ও উত্তরউপনিবেশ নানা ধরনের চিন্তাভাবনা, যার মধ্যে ছিল উপনিবেশিক কাঠামো থেকে রাষ্ট্র, প্রশাসন, আদালত থেকে নিয়ে শিক্ষার মতো সমাজ গড়ার নানা পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াকে বের করে এনে নতুন কাঠামোয় সাজানো।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একনিষ্ঠ। জাতির স্বার্থে তাকে যে শুধু পাকিস্তানীদের রোষানলে পড়তে হয়েছিল তা নয়, অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতাও তার পেছনে লেগেছিলেন। এমনকি তার নিজ দলেও কিছু বিরোধীতা ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন যে গণতন্ত্রের জন্য তিনি সংগ্রাম করছেন। তাকে প্রতিষ্ঠা করা গেলে তার ভাষায় 'এসব পরগাছা রাজনীতিবিদদের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাবে'।
আলোচনায় কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকল আন্দোলনের অবিসংবদিত নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ১৯৬৬ সালে লাহোরে এটি সভায় ৬ দফা উথাপন করতে চাইলে তাকে সেখানে থামিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু থামার পাত্র নয়, তিনি দেশে ফিরে এসে ৬ দফা তুলে ধরেন। খুবই সহজ সরল ভাষার নিজে তিনি একটি পুস্তিকা রচনা করেন। সেটি তিনি সারা বাংলাদেশে প্রচার করেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হলে তার মুক্তির এবং ৬ দফার পক্ষে ৭ জুন সারাদেশে হরতাল পালন করা হয় এবং এতে বিপুল সাড়া পড়ে। ৬ দফার অন্তর্নিহিত দাবী ছিল বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধীণতা। তা সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়িত হবে।
শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীণতার পথে ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছিলেন। ৬ দফায় তিনি মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারের কথা বলেছেন, রাজনৈতিক অধিকারের কথা বলেছেন, আমাদের প্রতিরক্ষার অধিকারের কথা বলেছেন, এই সবকিছু মিলিয়েই আমরা আসলে ৬ দফাকে পায় আমাদের স্বাধীণতা অর্জনের পথে একটি অন্যতম সোপান হিসেবে।
আলোচনা শেষে সভাপতির বক্তব্য প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এসময় তিনি ৬ দফা দাবীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন এবং বলেন, ‘৬ দফা দাবি মানুষ বাঁচার অধিকার হিসেবে লুফে নিয়েছিল’।
আরো পড়ুন: ‘৬ দফা দাবি মানুষ বাঁচার অধিকার হিসেবে লুফে নিয়েছিল’
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৭ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২০
এইচএমএস/এমএইচএম