নিষিদ্ধ সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম'র সদস্য হিসেবে তাকেসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাব।
তবে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও ভাইয়ের দাবি, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন) মেস ছেড়ে দেওয়ার জন্য রাজশাহীতে এসে নিখোঁজ হন আবদুর রহমান।
আবদুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বগুড়ার শাহজাদপুর উপজেলার পলিপলাশ গ্রামে।
রোববার (১৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৫ এর কোম্পানি অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম এর বরাত দিয়ে বলা হয়, শনিবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাজিপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাথানবাড়ি থেকে আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে আটক করা হয়। আটক চার যুবক পরিত্যক্ত ওই বাথানবাড়িতে গোপন বৈঠক করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল এ অভিযান চালায়। তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই জব্দ করা হয়েছে।
তবে আবদুর রহমানের পরিবার ও বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হলে সিট না পাওয়ায় আবদুর রহমান বিনোদপুর এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। করোনা ভাইরাসের কারণে গত মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে অন্য শিক্ষার্থীদের মতো বাড়িতে চলে আসেন আবদুর রহমান। তবে মাস পার হলে যেহেতু মেসের ভাড়া গুনতে হচ্ছিল তাই মেস ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও কাপড় চোপড় নেওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেলে বগুড়া থেকে মেসে এসে সিট ছাড়ার ঘোষণা দেন।
শুক্রবার (১২ জুন) সকালে আবদুর রহমান তার বাবাকে ফোন করে দুপুরের মধ্যে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান। কিন্তু, এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। শুক্রবার দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা হলেও তিনি বাসায় না ফেরায় সম্ভাব্য সব আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খোঁজ করে তার পরিবার। কিন্তু, এতেও তার সন্ধান না পেয়ে ওই রাতেই তার বাবা ইলিয়াস আলী বগুড়ার শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
আব্দুর রহমানের ছোট ভাই রাকিব বলেন, রোববার দুপুরে গোদাগাড়ি থানা থেকে বাবার কাছে একটি কল আসে। সেখানে ভাই আবদুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় বাবার। সে বর্তমানে গোদাগাড়ী থানায় পুলিশ হেফাজতে আছে। বাবাকে থানায় যেতে বলেছে।
রাকিব আরও দাবি করেন, আমার ভাই আবদুর রহমান নিয়মিত নামাজ পড়লেও কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন।
ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউর রহমান বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বাবা আমাকে ফোন করে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অবহিত করেন। আমি প্রক্টরকে বিষয়টি অবহিত করি। আজ বিকেলে ফেসবুকে দেখলাম অনেকে পোস্ট দিয়েছে জঙ্গি বৈঠকের সময় রহমান র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন।
র্যাবের অভিযানে আটক অপর তিন ‘জঙ্গি’ হলো- জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীপুর কুমাড়িয়া গ্রামের সবুর আলীর ছেলে আলী সুমন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হৃদয় খান পারভেজ এবং চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার শেখের তালুক গ্রামের মমিনুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
আরএ