ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাংনীতে চাল বিক্রি করে নগদায়ন করায় কোনো অনিয়ম হয়নি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
গাংনীতে চাল বিক্রি করে নগদায়ন করায় কোনো অনিয়ম হয়নি

মেহেরপুর: চুয়াডাঙ্গার দুটি গোডাউন থেকে জব্দ করা ১২৬৬ বস্তা চাল চাল সঠিক প্রক্রিয়ায় সরবরাহ করা হয়েছে এবং তার বিক্রি করে নগদায়ন করায় কোনো অনিয়ম হয়নি।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কর্তৃক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের কাছে এভাবেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার এবং মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্ব স্ব দফতরে চাল কাণ্ডের বিষয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে দুটি বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে প্রথমটি প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প সভাপতিগণের প্রকল্প কমিটির সদস্যদের এবং স্থানীয় উপকারভোগীদের জানানোর বিষয়ে সচেতনতার অভাব ছিলো। এ কারণে জনমনে সন্দেহ হয়েছিল। এছাড়া বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত চাল ৬০ ভাগ বিক্রয় করে নগদায়ন করার সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়টি, প্রকল্প সমূহ যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় এবং কোনো অনিয়ম যেন না হয় এজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয়েছে।
 
মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্যর অনুকূলে গ্রামীণ অবকাঠোমো উন্নয়ন প্রকল্পের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে কাবিখা প্রকল্পে ১৬০টি মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দের অনুকূলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

সংসদ সদস্যের ডিও এবং জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পিআইসিরা মোট ৩৭ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করেন। প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করতেই প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা চাল বিক্রি করে ইট, বালি ও অন্য উপকরণ কেনাসহ লেবার খরচের যোগান দেন। ওই চাল স্থানীয় এক ব্যবসায়ী কিনে চুয়াডাঙ্গার সাতগাড়িয় এলাকার জনৈক নজরুল ইসলামের দুটি গোডাউনে রাখতে গিয়ে প্রশাসনের নজরে পড়ে। সে সময় চালগুলো জব্দ দেখিয়ে গোডাউন দুটি সিলগালা করে দেন।

এ ঘটনার বিচার দাবি করে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক, সাবেক পৌর মেয়র আহমেদ আলী, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজন নেতা সাংবাদিক সম্মেলন করে সুষ্ঠ তদন্ত বিচার দাবি করেন। এছাড়া সোস্যাল মিডিয়াতে নানা ধরনের আপত্তিকর স্ট্যাটাস প্রদান ও এক পত্রপত্রিকাগুলো নানাভাবে সংবাদ পরিবেশ করে আসছিলো।
 
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের তদন্ত দল এবং বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে এসব পিআইসিদের কাছ থেকে আলাদা আলাদাভাবে সাক্ষ্য নেন। গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা দুই জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার এবং মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি যৌথভাবে জানান, ৩৭ টন (১২৬৬ বস্তা) চাল বিক্রয়ে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি। চাল মালিকদের কাছে চাল বুঝিয়ে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ীর গোডাউন দুটিকে ৩৭ টন (১২৬৬ বস্তা) চালসহ সিলগালা করে উপজেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিতে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।