কালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়া দেশীয় প্রজাতির পাখিদের মধ্যে যেন এখন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে। এখন ভোলার গ্রাম-গঞ্জের মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে, গাছে গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ নানা ধরনের পাখি দেখা যায়।
করোনা ভাইরাসের কারণে বনাঞ্চলে বা লোকালয়ে মানুষের জনসমাগম কমে যাওয়ায় পাখিরাও যেন প্রতিকূলতা ছাড়াই গাছে গাছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন চিত্র মুগ্ধ করছে পাখিপ্রেমীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট মেসবাহুল আলম বাংলানিউজকে জানান, প্রকৃতি যেন নিজের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিছুদিন আগেও আমরা পাখিদের দেখা পেতাম না, এখন গাছে গাছে পাখিদের দেখি, দলবেঁধে ছুটেচলা দেখি। এসব দেখে আমাদের সবার ভালো লাগছে। পাখিদের ডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। বিশেষ করে দেশীয় প্রজাতির পাখি এখন সর্বত্রই দেখা মেলে। গাছে গাছে পাখির কলকাকলি শোনা যায়।
জানা যায়, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত সেসব পাখিগুলোর ডাক ও সুর মানুষকে মুগ্ধ করতো সেই পাখিই ক্রমান্বই হারিয়ে যেতে বসলেও তা যেন আবার সরব হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দোয়েল পাখিরও এখন দেখা মিলছে।
কয়েকজন বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোয়েল, ময়না, কোকিল, শালিক, চড়ুইসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির পাখি গ্রামাঞ্চলের বিলে-ঝিলে, ঝোপে-ঝাড়ে, গাছের ডালে, বাগানে কিংবা বাড়ির আঙিনার ডালে বসে তার সুরের ধ্বনিতে মুগ্ধ করে। এই পাখির কিচিরমিচির শব্দ এখন কানে শোনা যায়। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশ গাছে, আমের ডালে, সজিনা গাছে, বাড়ির ছাদে এসব পাখি সব সময় দেখা যায়। দেখা মেলে টিয়া, ঘুঘু, বক, কাক, মাছরাঙ্গা, ইত্যাদি পাখি শহর, গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায়।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তৈহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকৃতি এখন নিজের রুপে রয়েছে, যেহুতু পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ, মানুষের আনাগোনা কম, তাই পাখিরাও নিজেদের মতো বিচরণ করছে। তাছাড়া যাতে কেউ পাখি শিকার করতে না পারে সেজন্য আমাদের টহল অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ভোলা উপকূলের পাখিদের আবাসস্থল রক্ষায় আরও তৎপর হলে ভবিষ্যতে পাখিদের এমন বিচরণ অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করছে সচেতনমহল।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২০
এনটি