রোববার (২৮ জুন) মধ্যরাত থেকে সোমবার (২৯ জুন) দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বর ও বিভিন্ন এলাকায় জাল টাকা বিরোধী অভিযান চালায় র্যাব-২ এর সদস্যরা।
ঈদুল আজাহাকে সামনে রেখে জাল টাকা বাজারে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছিল একটি চক্র।
আটক ছয়জন হলেন- সেলিম মিয়া (৪০), মনিরুল হক (৪০), রমিজা বেগম (৩২), জান্নাতুল ফেরদৌস (৪০), মঈন (৪০) ও খুদেজা বেগম (৩২)।
সোমবার (২৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, আগের জাল টাকার অভিযানগুলোতে দেখেছি, জাল টাকা তৈরি করে একটি স্থানে রেখে দেওয়া হতো। কিন্তু এই চক্রটি কৌশল একটু নতুনত্ব পেয়েছি। জাল টাকা তৈরির মূল হোতা সেলিম মিয়া থাকেন ময়মনসিংহের কেন্দুয়া এলাকায়। তার সহকর্মীরা টাকা বানানোর প্রাথমিক কাজ ঢাকায় বসে করেন। প্রাথমিক কাজ শেষ হলে মূলহোতা ঢাকায় এসে জাল টাকা ছাপানোর কাজ নিজে করেন। কারণ জাল টাকা তৈরির শিক্ষাটি অন্য কাউকে শেখাতে চান না সেলিম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসায় ভাগ ভাগ করে টাকাগুলো রাখে। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাছে কেউ ধরা পড়লে একসঙ্গে যেনো সব টাকা ধরা না পড়ে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে টাকা তৈরির কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথম ধাপে নির্দিষ্ট একটি মাপের কাগজ পুরান ঢাকা থেকে কিনে নিয়ে আসে। তারা সেই একটি কাগজ দিয়ে চারটি নোট তৈরি করেন। রাজধানীর আরেকটি এলাকার বাসায় টাকার সিকিউরিটি ব্যান্ড বসায় এবং জলছাপ দিয়ে টাকাগুলো প্রাথমিক কাজ শেষ করে মিরপুরের নিয়ে আসেন। টাকাগুলো প্রিন্টের কাজ মিরপুরের বাসায় বসে করেতেন সেলিম।
তিনি বলেন, এক লাখ টাকার জাল বান্ডিল ১৮ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায় পাইকাররা। ঈদের সময় এই জাল টাকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বান্ডেলগুলো আরও বেশি দামে বিক্রি করেন। এই পাইকাররা টাকাগুলো নিয়ে বান্ডেলের মধ্যে দুইটি তিনটি করে মিশিয়ে দেয় পাইকাররা।
সারওয়ার বিন কাশেম সেলিম সম্পর্কে বলেন, ২০১৮ সালে ৫৪ লাখ ভারতীয় রুপি ও পাঁচ লাখ টাকার জাল টাকাসহ র্যাব-২ এর কাছে আটক হয়েছিল। সাত মাস আগে জেল থেকে বেরিয়ে এসে আবারো জাল টাকা তৈরি শুরু করে। ঈদকে কেন্দ্র করে ৩০-৪০ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল চক্রটি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২০
এমএমআই/এনটি