হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সকল ছাত্রছাত্রীকে বুধবার থেকে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নিশ্চিতের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু টিকা সংরক্ষণ জটিলতা ও নানা প্রতিবন্ধকতায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগ ৮ দিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৫টি কেন্দ্রে মাত্র ১৪ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ প্রয়োজন হওয়ায় উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না। এজন্য শুধু ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেওয়া হবে।
জেলায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার। অন্যদিকে রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তাই মাত্র ৯ দিনে সকল শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া অত্যন্ত কঠিন হবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকা প্রদানের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। এখান থেকে সকল শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু হাওর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী টিকা থেকে বঞ্চিত হবে। কয়েকজন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বাজেট স্বল্পতার কারণে তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ প্রস্তুত করতে পারেননি। তবে শুধু নবীগঞ্জ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা রয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ জানান, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় আজ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ দিনের মধ্যে টিকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে আলাদা বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয়ভাবে স্কুলের কন্টিজেন্সি ফান্ড থেকে এয়ারকন্ডিশন কিনতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকার কারণে তাদেরকে অনেক ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আয়ের উৎসও কম। এজন্য তারা টিকা কেন্দ্র প্রস্তুতের ব্যবস্থা করতে পারবেন না।
এদিকে, হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বল জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে কোনো টিকা মজুদ নেই। তবে বুধবার ২২ ডিসেম্বর টিকা আসবে। তবে কী পরিমাণ আসবে তা বলা যাচ্ছে না।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. রফিকুল আলম বলেছেন, তারা সরকারের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকাদান করতে পারবেন, এজন্য সবধরনের প্রস্তুতিও নিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
এসআইএস