ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

‘প্রথা ভেঙে’ ইন্ডিয়ান কফি হাউসে নারী কর্মী!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৯
‘প্রথা ভেঙে’ ইন্ডিয়ান কফি হাউসে নারী কর্মী! কাজে ব্যস্ত নতুন নারী কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

যা ছিল কল্পনারও বাইরে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ইন্ডিয়ান কফি হাউসের ইতিহাসে! সবার কাছেই বিষয়টা একেবারেই নতুন! এমন ঘটনা একেবারেই নতুন প্রতিষ্ঠানটির কাছেও। এর আগে প্রতিষ্ঠানের ৬১ বছরের ইতিহাসে এমনটা ঘটেনি! এটাকে দেখা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে ‘বিরাট গৌরব’ হিসেবে।

তবে কী এমন ঘটলো ভারতের চেইনশপটিতে যাকে দেওয়া হচ্ছে আলাদা গুরুত্ব? বলা হচ্ছে, যে কাণ্ড ঘটেছে তা আবার বিরাট গৌরবের! আসলে গৌরব করার মতো যুগান্তকারী একটা পদক্ষেপই নিয়েছে তারা! ৬১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চেইন শপটি নিয়োগ দিয়েছে নারী কর্মী! তাও এক দুইজন নয় দশজন। এটা তাই গৌরবের বলাটা বাহুল্য নয়।

১৯৫৮ সালে যাত্রা শুরু করে ইন্ডিয়ান কফি হাউস। দেশজুড়ে রয়েছে তার প্রায় ৪০০টি চেইন শপ। আগে এসবে কখনো কোনো নারী কর্মী কাজ করতো না। তবে এ ইতিহাস এখন অতীত। এগুলোতে এখন পুরুষ কর্মীদের পাশাপাশি কাজ করতে দেখা যাবে নারীদেরও।

শ্রীকুত্তি ও শীনা নতুন নিয়োগ পাওয়া ওই নারী কর্মীদের মধ্যে অন্যতম। এরমধ্যে শীনার সঙ্গে কথা হয় ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছেন। তিনি ইন্ডিয়ান কফি হাউসেই কুক হিসেবে কাজ করতেন। আমি জানতাম এখানে নারীদের কাজ দেওয়া হয় না। কিন্তু সময় বদলে গেছে। আমি নিজের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করতে সক্ষম হই যে, আমি এখানে কাজ করার যোগ্য। আমাকে এ বিষয়ে অনেকই সমর্থন দিয়েছেন। বর্তমানে আমার সন্তান ও শাশুড়ির ভরণপোষণের দায়িত্ব আমার ওপর। ’

এখনো তারা কাজ করছেন শিক্ষানবিশ হিসেবে।  ছবি: সংগৃহীত

আর শ্রীকুত্তির একটা চাকরিটা খুব দরকার ছিল। তিনি মাত্র কয়েকমাস আগেই হারিয়েছিলেন তার স্বামীকে। তিনি দুই সন্তান নিয়ে বলতে গেলে ভালোই বিপদে পড়ে যান। ইন্ডিয়ান কফি হাউসের চাকরি তার জন্য ‘আশার প্রদীপ’ হয়ে ধরা দিয়েছে। তার মতে, ‘আমি এ চাকরি পাওয়ায় অত্যন্ত আনন্দিত। চারপাশ থেকে আমাকে সবাই বেশ সমর্থন দিচ্ছে, এটা সত্যি ভাগ্যের বিষয়। ’

তারা এখনো শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছেন বলে জানালেন শীনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছি। ভালোভাবে রান্না, সার্ভিস, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ শেখা শেষে আমরা নিয়মিত কর্মীদের মতো কাজ করার সুযোগ পাবো। ’

অনিল কুমার। তিনি প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব ডিরেক্টরদের মধ্যে অন্যতম। তিনি জানান, এ নারী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শীনার আবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। না হয় এ পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ এত সহজ হতো না।

তিনি বলেন, ‘শীনা যখন প্রথম চাকরির আবেদন করলো, আমাদের হাতে তখন তাকে নেওয়ার কোনো অপশন ছিল না। কারণ আমরা নারী কর্মী নিয়োগ দিই না। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো নারী কর্মীদের নেওয়া হবে এখন থেকে। বৈপ্লবিক এ পরিবর্তনে আমরা খুশি। ’

প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত সাধুবাদ কুড়িয়েছে গ্রাহকদের কাছ থেকেও।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৯
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।