তাফসির: আলোচ্য আয়াতে পরকালের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য সম্পর্কে মূলনীতি বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মানুষের সফলতার ক্ষেত্রে বাহ্যিক শক্তি হিসেবে পথনির্দেশকের যেমন প্রভাব আছে, তেমনি মানুষের নিজেদের কৃতকর্মের ভূমিকা আছে।
পার্থিব জগতে বিভিন্ন কৌশলে একজনের দোষ অন্যজনের ঘাড়ে চাপানো যায়, আল্লাহর আদালতে এ ধরনের কাজের কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যেকেই নিজের অপরাধের শাস্তি ভোগ করবে। কেউ কারো পাপের বোঝা বহন করবে না। দুনিয়ায় যে যেমন কাজ করবে, পরকালে সে তার কাজ অনুযায়ী ফল ভোগ করবে। ভালো কাজ করলে ভালো প্রতিদান পাবে। আর মন্দ কাজ করলে ফলও পাবে অনুরূপ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে, সে তার শাস্তি পাবে এবং সে আল্লাহ ছাড়া নিজের কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। আর নারী-পুরুষের মধ্য থেকে যারাই সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। অণু পরিমাণও তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১২৩-১২৪)
প্রত্যেক মানুষকে তার ভালো-মন্দ প্রতিদান দেওয়ার জন্য পরকাল সৃষ্টি করা হয়েছে। সৎ কর্মপরায়ণ ঈমানদাররা সুখময় জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর অবিশ্বাসীরা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘যারা মন্দ কাজ করে, তিনি তাদের মন্দ ফল দেন। আর যারা সৎ কাজ করে, তাদের দেন উত্তম প্রতিদান। ’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩১)
কিয়ামতের দিন খুব দ্রুত পৃথিবীর আদি-অন্ত সব মানুষের হিসাব হবে। এটা আল্লাহর সহজসাধ্য। তিনি দ্রুততম হিসাব গ্রহণকারী। কেননা তিনি সব কিছু জানেন। কোনো কিছুই তাঁর কাছে গোপন নয়। তাঁর অসীম কুদরতের সামনে গোটা সৃষ্টিজগৎ একটিমাত্র প্রাণীর সৃষ্টিসদৃশ। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের সবার সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একটি প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের অনুরূপ। ...(সুরা : লুকমান, আয়াত : ২৮)
ইসলাম ধর্মের অন্যতম বিশ্বাস হলো, পরকালের জবাবদিহি ও হিসাব-নিকাশ। পবিত্র কোরআনের বহু আয়াতে এ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের হিসাব-নিকাশ অতি নিকটে। অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে আছে। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ১)
গ্রন্থনা: মাওলানা আহমদ রাইদ
রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘন্টা, মে ২১, ২০১৯
এমএমইউ