ঢাকা, রবিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জীবনযাপন

পর্ব- ১১

পৃথিবীতে সবার জন্য রিজিক অবারিত

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
পৃথিবীতে সবার জন্য রিজিক অবারিত .

‘আমি এদের (পরকালপ্রত্যাশী) ও ওদের (দুনিয়াপ্রত্যাশী) প্রত্যেককে তোমার রবের দান দ্বারা সাহায্য করে থাকি এবং তোমার রবের দান অবারিত (কারো জন্যই রুদ্ধ নয়)।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২০)

তাফসির: আগের দুই আয়াতে পরকালের কল্যাণকামী ও দুনিয়াপূজারি মানুষের পরিণতির কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে উভয় শ্রেণির পার্থিব রিজিক সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

এখানে বলা হয়েছে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী এই উভয় শ্রেণি পার্থিব জীবনযাপনের সুযোগ পেয়ে থাকে। এ জন্য তারা আল্লাহর দয়া ও করুণা পেয়ে থাকে। এর কারণ হলো, দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা। এখান থেকেই পরকালের জন্য পাথেয় সঞ্চয় করতে হয়। তাই এখানে সুখ-ভোগ, ভালো কিংবা মন্দ পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে আল্লাহ দুনিয়ার প্রতি মোহগ্রস্ত হওয়া পছন্দ করেন। আর কাফির-মুশরিকদের রিজিক দেওয়ার অর্থ এই নয় যে আল্লাহ তাদের কাজকর্মে সন্তুষ্ট।

দুনিয়ায় জীবন উপকরণ দুনিয়াদাররাও পায় এবং পরকালপ্রত্যাশীরাও পায়। এসব আল্লাহরই দান। পরকালপ্রত্যাশীদের জীবিকা থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা দুনিয়াপূজারিদের নেই। আর দুনিয়াপূজারিদের কাছে সহায়-সম্পদ পৌঁছার পথে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা পরকালপ্রত্যাশীদেরও নেই।

অবিশ্বাসীরা দুনিয়ায় লাগামহীনভাবে বসবাস করে। তারা পৃথিবীকে মাদকতা, অশ্লীলতা, জুলুম, নির্যাতন, বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলায় ভরে দেয়। এভাবে তারা জাহান্নামের আজাবের যোগ্য হয়ে যায়। আল্লাহ তাদের তাওবার সুযোগ দেন। কিন্তু অব্যাহত পাপ করে একসময় তারা তাওবার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। অবশেষে পাপাচারে ভরপুর দেহ-মন নিয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে। তারা যদি কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকত, তাহলে তত দিন পর্যন্ত কুফরি করেই যেত। তাই পরকালে তাদের জন্য অনন্তকালের আজাব রয়েছে।

অবিশ্বাসীদের মধ্যেও বহু মানুষ রয়েছে, যারা আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে। অনেকে দান-সদকা করে, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে এবং সুখে-দুঃখে পাড়া-প্রতিবেশী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। নিঃসন্দেহে এগুলো ভালো কাজ। কিন্তু পরকালে এগুলোর সুফল মিলবে না। কেননা পরকালে ঈমানহীন কোনো আমল গ্রহণযোগ্য নয়। তবে এসব কাজের প্রতিদান অবিশ্বাসীদের দুনিয়ায় দিয়ে দেওয়া হয়। পরকালে তাদের জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি কেউ (ভালো কাজের বিনিময়ে) পার্থিব জীবন ও তার শোভা কামনা করে, তাহলে পৃথিবীতেই আমি তাদের কর্মের পূর্ণ ফল দান করি। এখানে তাদের কম দেওয়া হয় না। কিন্তু তাদের জন্য পরকালে (দোজখের) আগুন ছাড়া অন্য কিছু নেই। পার্থিব জীবনে তারা যা করে, পরকালে তা নিষ্ফল হবে এবং তারা যা করে, তা অগ্রহণযোগ্য। ’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১৫-১৬)

মুমিনদের জীবন এর বিপরীত। মুমিনরা দুনিয়ায় যাবতীয় কাজের মাধ্যমে আখিরাত লাভের চেষ্টা করে। দুনিয়া মুমিনদের জন্য আখিরাতের পথ চলার সাময়িক বিশ্রামাগার। ঈমানদারের কাছে দুনিয়াই সব কিছু নয়। দুনিয়ার জীবনের পরে রয়েছে পরকালের জীবন। দুনিয়া হলো পরকালের জন্য পাথেয় সঞ্চয় করার স্থান।

গ্রন্থনা : মাওলানা আহমদ রাইদ

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘন্টা, মে ২২, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জীবনযাপন এর সর্বশেষ