ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজনীতিতে নারী

আট বছরে প্রতিশ্রুতির অর্ধেকও পূরণ করেনি দলগুলো

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
আট বছরে প্রতিশ্রুতির অর্ধেকও পূরণ করেনি দলগুলো

ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধন নেওয়ার সময় কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য অন্তর্ভূক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো নির্বাচন কমিশনকে (ইসি)। কিন্তু ২০০৮ সালে দেওয়া সে প্রতিশ্রুতির অর্ধেকও এখন পর্যন্ত পূরণ করেনি তারা।


 
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)১৯৭২ এর ৯০ এর বি উপধারা অনুযায়ী, ইসিতে নিবন্ধন পেতে হলে কোনো দলকে ২০২০ সালের মধ্যে সকল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ সৃষ্টি করে তা পূরণ করার কথা। যা প্রত্যেক দলের গঠনতন্ত্রেও উল্লেখ থাকতে হবে।
 
সে মোতাবেক ২০০৮ সালে নিবন্ধন নেওয়ার সময় দলগুলো তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করে ইসিতে জমা দেয়। পরবর্তীতে তারা নিবন্ধনও পেয়ে যায়।
 
দেশে শতাধিক রাজনৈতিক দল থাকলেও ইসির নিবন্ধন পেয়ে নির্বাচন উপযোগী দলের সংখ্যা ৪০টি। সেগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কোনো দলই আট বছরে প্রতিশ্রুতির অর্ধেক পূরণ করতে পারেনি।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকল কমিটি তো দূরের কথা কেন্দ্রীয় কমিটিগুলোতেও দলগুলো নারীদের তেমন অন্তর্ভূক্ত করছে না। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব দলেরই একই অবস্থা। তবে ছোট দলগুলোর অবস্থা আরো নাজুক।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি হচ্ছে ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট। এর মধ্যে নারী সদস্য রয়েছেন ১১ জন। যা মোট সদস্যের ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ নিবন্ধনের আট বছরেও দলটি শর্তের অর্ধেক পূরণ করতে পারেনি। এ দলটির কমিটি ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট হলে নারী সদস্য হওয়া উচিত ২৪ জনের বেশি।
 
এদিকে বিএনপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি ৩৮৬ সদস্য বিশিষ্ট। এর মধ্যে নারী সদস্য রয়েছেন ৪৭ জন। যা মোট সদস্যের ১২ শতাংশ। অথচ এ দলের নারী সদস্য হওয়া উচিত অন্তত ১২৭ জন।
 
ইসি’র যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী বাংলানিউজকে বলেন, নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ২০১৩ সালে নিবন্ধন নিয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বড় দলগুলো ২০০৮ সালে নিবন্ধন নিয়েছে। এক্ষেত্রে নিবন্ধনের পর আমরা আর তাদের কমিটিগুলো খতিয়ে দেখিনি। দলগুলোও তাদের কমিটির হালনাগাদ তথ্য দেয়নি। তাই তাদের কমিটিগুলো খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য আমি একটি নোট দিয়েছি। এখন কমিশন নির্দেশনা দিলে পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
 
আরপিওতে যেহেতু ২০২০ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে কোনো দল শর্ত পূরণ না করলে সময় শেষ হওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
এদিকে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, শুধুমাত্র কমিটিগুলোতে সদস্য পদে নারীদের অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়েই দলগুলোর অনীহা নয়, নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের অনীহা রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচনে নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ খুব একটা দেখা যায় না।
 
ইসি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সচিব বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বড় দল। তারাই ক্ষমতায় আসে। কিন্তু প্রথমবারের মতো দেশে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন হলো পৌরসভায়। কিন্তু সে নির্বাচনে নারী মেয়র হয়েছেন মাত্র ৩ জন। আর মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন মাত্র ১৫ জন। অথচ নির্বাচন হয়েছে প্রায় আড়াইশ’ পৌরসভায়। এদিকে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে নারী প্রার্থী তেমন নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।